গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বর্তমানে একটি সাধারণ শারীরিক অসুবিধা, যা মূলত অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণের কারণে হয়। এটি পেটে জ্বালা, বমি ভাব, ঢেকুর ওঠা, পেট ফাঁপা এবং বদহজমের মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে এই সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করলে পাকস্থলীর অতিরিক্ত অ্যাসিড দূর হয় এবং হজমশক্তি উন্নত হয়। জিরার মধ্যে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অ্যাসিডিক উপাদান থাকে, এক চামচ জিরা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করে পান করলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আদা হজমে সহায়তা করে এবং পাকস্থলীর প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, এক কাপ আদা চা বা সামান্য আদার রস খেলে অম্বল কমতে পারে। মৌরি হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখে, এক চামচ মৌরি চিবিয়ে খেলে বা মৌরির পানি পান করলে আরাম পাওয়া যায়। ঠান্ডা দুধ প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে, এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ খেলে এসিডিটির সমস্যা কমতে পারে।
কলার মধ্যে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অ্যাসিডিক উপাদান থাকায় এটি পাকস্থলীর অম্লতা কমাতে সাহায্য করে। শসা ও তরমুজের মতো পানি সমৃদ্ধ খাবার খেলে পাকস্থলীর অতিরিক্ত অ্যাসিড নির্গমন কমে। লবঙ্গ পাকস্থলীর অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, এক টুকরো লবঙ্গ মুখে রাখলে অস্বস্তি কমে যায়। তুলসী পাতা হজমে সাহায্য করে এবং গ্যাস্ট্রিকের উপসর্গ কমায়, তাই তুলসী পাতার রস বা চা পান করা যেতে পারে। এলাচ পাকস্থলীর প্রদাহ কমায় এবং হজমশক্তি বাড়ায়, এক কাপ গরম পানিতে এক টুকরো এলাচ ফুটিয়ে পান করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পেতে খাদ্যাভ্যাসের প্রতি সচেতন হওয়া জরুরি। অতিরিক্ত ঝাল, মসলাযুক্ত এবং ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করা উচিত। বেশি সময় না খেয়ে থাকলে পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হয়, তাই নিয়মিত বিরতিতে অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া উচিত। রাতে খাবারের পরপরই শুয়ে না পড়ে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে হজম ভালো হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে। পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পাকস্থলীর অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে ঘরোয়া উপায় মেনে চললে অনেক ক্ষেত্রেই ওষুধ ছাড়াই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।