আগের বছরগুলোতে গাছ থেকে আম নামানোর নির্ধারিত সময় নিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের আম চাষীদের মতের অমিল দেখা দিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলার আম চাষী, ব্যবসায়ী ও অন্য অংশীজনদের নিয়ে ম্যাংগো ক্যালেন্ডার প্রস্তুত করেছে জেলা প্রশাসন।
পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীদের অপরিপক্ক আম বাজারজাত ঠেকাতে এবছরও আম নামানোর তারিখ নির্ধারণ করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৫ মে থেকে শুরু হচ্ছে আম সংগ্রহ। এরপর ধাপে ধাপে নামানো যাবে বিভিন্ন জাতের আম। তবে কোনো গাছের ফল আগাম পাকা শুরু হলে অনুমতি সাপেক্ষে তা সংগ্রহ করা যাবে।
আর আম নিয়ে সব ধরনের কারসাজি ঠেকাতে পুরো মৌসুম জুড়েই প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ মে থেকে সব ধরনের গুটি আম, ২৫ মে গোপালভোগ, রানিপছন্দ ও লক্ষণভোগ, ৩০ মে খিরসাপাত, ১০ জুন ল্যাংড়া ও কাটিমন (ব্যানানা ম্যাংগো), ১৫ জুন আম্রপালি ও ফজলি, পাঁচ জুলাই বারি-৪, ১০ জুলাই আশ্বিনা, ১৫ জুলাই গৌড়মতি এবং ২০ আগস্ট থেকে ইলামতি জাতের আম নামানো যাবে। আর বছর জুড়ে সংগ্রহ করা যাবে কাটিমন ও বারি আম-১১।
এদিকে সবার অংশগ্রহণে আম নামানোর এই তারিখ নির্ধারণ করায় খুশি আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এতে গাছ থেকেই পরিপুষ্ট আম নামানো সম্ভব হবে।
এবছর জেলার ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমির আম বাগনে দুই লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ মেট্রিকটন আম উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
অপরদিকে গত বছর কয়েক দফা তারিখ পিছিয়ে আম পরিবহনে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু করা হলেও এবার মৌসুমের শুরুতেই তা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পঞ্চমবারের মতো এই ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু হবে ১০ জুন। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে বিকেলে চারটায় ছেড়ে পদ্মাসেতু হয়ে রাত সোয়া দুইটায় ঢাকায় পৌঁছাবে।
সেমিনারে জানানো হয়, ছয়টি লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে আম পরিবহন করা যাবে ২৮ দশমিক ৮৩ টন।
যাত্রা পথে রহনপুর স্টেশন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, আব্দুলপুর, ঈশ্বরদী, পোড়াদহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও ভাঙ্গাসহ মোট ১৫টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। এই ট্রেন ঢাকায় পৌঁছাবে রাত দুইটা ১৫ মিনিটে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি আম পরিবহনে ভাড়া লাগবে এক টাকা ৪৮ পয়সা, রাজশাহী থেকে এক টাকা ৪৩ পয়সা, পোড়াদহ থেকে এক টাকা ১৯ পয়সা, রাজবাড়ী থেকে এক টাকা সাত পয়সা, ফরিদপুর থেকে এক টাকা এক পয়সা এবং ভাঙ্গা থেকে মাত্র ৯৮ পয়সা।