গাজায় পঞ্চমবারের মতো জিম্মি-বন্দি বিনিময় হতে যাচ্ছে। ইসরায়েলের হাতে আটক ১৮৩ জন বন্দীর বিনিময়ে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস শনিবার তিনজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা উপত্যকা থেকে বাসিন্দাদের বিতাড়িত করার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের প্রস্তাব নিয়ে এই অঞ্চলে তীব্র বিক্ষোভ সত্ত্বেও এই বিনিময় ঘটতে যাচ্ছে। জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় শুক্রবার এএফপিকে নিশ্চিত করে জানায়, হামাস মুক্তির জন্য তিনজন বন্দির নাম প্রকাশ করার পর তারা গাজা থেকে মুক্তির জন্য জিম্মিদের নামের একটি তালিকা পেয়েছে। হামাসের মতে, শনিবার যাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে তারা হলেন এলি শারাবি, ওর লেভি এবং ওহাদ বেন অ্যামি। নেতানিয়াহুর কার্যালয় তাদের নাম নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পৃথক এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনে অবস্থানরত নেতানিয়াহু ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিধিদলের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে জিম্মিদের মুক্তির এই পর্যায় পর্যবেক্ষণ করবেন’।
গাজায় হামাস যোদ্ধাদের কাছ থেকে গত সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া প্রাক্তন জিম্মি ইয়ার্ডেন বিবাস শুক্রবার নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে তার স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেছেন। মুক্তির পর তার প্রথম প্রকাশ্য বার্তায় বিবাস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, এখন আমার নিজের কথা দিয়ে আপনার কাছে আবেদন করছি, আমার পরিবারকে ফিরিয়ে আনুন, আমার বন্ধুদের ফিরিয়ে আনুন, সবাইকে ঘরে ফিরিয়ে আনুন।’ হামাস জানিয়েছে, বিবাসের স্ত্রী শিরি এবং তার দুই ছেলে আরিয়েল এবং সবচেয়ে ছোট জিম্মি কেফির ইসরায়েলি বিমান হামলায় মারা গেছেন। কিন্তু ইসরায়েল তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম শুক্রবার সরকারকে গাজা যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। যদিও ট্রাম্পের মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্য এবং তার বাইরেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ইসরায়েলি প্রচারণা গোষ্ঠী এক বিবৃতিতে বলেছে, সমগ্র জাতি জিম্মিদের বাড়ি ফিরে যেতে দেখতে চায়। এতে আরো বলা হয়েছে, চুক্তিটি পুরোপুরি বাস্তবায়নের এখনই সময়। যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের অধীনে ইসরায়েল ও হামাস এরআগে চারটি বিনিময় সম্পন্ন করেছে।
হামাসের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এ পর্যন্ত ১৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে, বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পেয়েছে। কাতার, মিশর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ৪২ দিনের পর্যায়ে ৩৩ জন জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা সোমবার থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলোচনার অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষ্য আরো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া এবং যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের পথ প্রশস্ত করা।
সূত্র: এএফপি
এসজেড