দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে বিরল এক আবহাওয়াজনিত ঘটনা দেখা যাচ্ছে—একই সময়ে তিনটি ট্রপিক্যাল সাইক্লোন সক্রিয় রয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়া এই ঝড়গুলো হলো রে, সেরু এবং আলফ্রেড। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে সৃষ্টি হওয়া এই তিনটি ঝড় বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূল থেকে প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত সমুদ্র অঞ্চলে ঘূর্ণায়মান রয়েছে।
বিরল হলেও নজিরবিহীন নয়
ইউনিভার্সিটি অ্যাট অ্যালবানি-এর বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ব্রায়ান ট্যাং জানান, একই সময়ে তিনটি ট্রপিক্যাল সাইক্লোনের সক্রিয় থাকা অত্যন্ত ব্যতিক্রমী ঘটনা হলেও সম্পূর্ণ নজিরবিহীন নয়। ২০২১ সালের জানুয়ারিতেও একই সঙ্গে লুকাস, আনা ও বিনা নামের তিনটি ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে সক্রিয় ছিল।
ত্রয়ী সাইক্লোনের বর্তমান অবস্থা
আলফ্রেড: সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সৃষ্টি হয়ে দ্রুত তৃতীয় ক্যাটাগরির শক্তিশালী ঝড়ে পরিণত হয়েছে। এতে কোরাল সাগরে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এটি স্থলভাগে আঘাত হানবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
রে: শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ফিজির উত্তরে সৃষ্টি হয় এবং ইতোমধ্যেই প্রবল বাতাস ও ভারী বৃষ্টিপাতে ফসলের ক্ষতি করেছে।
সেরু: মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় এবং এটি ভানুয়াতুর কাছাকাছি অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি স্থলভাগে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকটের কারণে মহাসাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন তৈরির অন্যতম কারণ। ২০২৪ সালে সমুদ্রের উষ্ণতা রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝড়ের সংখ্যা না বাড়লেও উচ্চ ক্যাটাগরির সাইক্লোনের সংখ্যা এবং তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, কিছু সাইক্লোন স্থলভাগে ধীরগতিতে অগ্রসর হওয়ায় এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব আরও তীব্র হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বর্তমান পরিস্থিতি জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবেরই ইঙ্গিত বহন করছে।
thebgbd.com/NIT