ভাজাপোড়া খাবার ইফতারে না রাখলে তা শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে, কারণ এ ধরনের খাবারে তেল ও মশলার পরিমাণ বেশি থাকে, যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। রোজার পর পেট পরিষ্কার এবং হালকা খাবারের প্রয়োজন হয়, তাই ইফতারে কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প রাখা ভালো। নিচে কিছু সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা ভাজাপোড়া ছাড়াই ইফতারে রাখা যেতে পারে:
১. ফলমূল
খুবই উপকারী: তাজা ফল যেমন তরমুজ, পেয়ারা, আপেল, আঙুর, পেঁপে ইত্যাদি তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে।
ফলসালাদ: কয়েকটি ফলের টুকরা একত্রিত করে তাতে এক টুকরো লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে সুস্বাদু ফলসালাদ তৈরি করতে পারেন।
২. চাট (চিকেন বা মটন ছাড়া)
ডিম বা টোফু চাট: সেদ্ধ ডিম বা টোফু কিউব করে তার সাথে চাটনি, টমেটো, শশা ও একটু গোলমরিচ যোগ করে সুস্বাদু চাট তৈরি করা যেতে পারে।
ফলমূল চাট: মিষ্টি ফল (যেমন আপেল, পেঁপে, আঙুর) দিয়ে চাট বানানো যেতে পারে, তাতে হালকা চিনি, চাটমশলা, সাদা লবণ দিয়ে মজা নিতে পারবেন।
৩. দই
ডাবল রুটি দই: দই খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে প্রোবায়োটিক্স পৌঁছায়, যা হজমের জন্য ভালো। এর সঙ্গে মিষ্টি বা ফল মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
পুদিনা দই: পুদিনা পাতা দিয়ে দই মিশিয়ে স্বাস্থ্যকর ও স্বাদে ভরপুর একটি বিকল্প তৈরি করতে পারেন।
৪. তাজা স্যালাড
শশা, গাজর, শাকসবজি স্যালাড: তাজা শশা, গাজর, টমেটো, শালগম, শালগম পাতা দিয়ে স্যালাড তৈরি করতে পারেন। এতে পুষ্টির সাথে শরীর ঠান্ডা থাকে।
কাবাব স্যালাড: মাংস বা মটন কাবাব না করে, মটরশুঁটি, ছোলা, টমেটো, শশা ও অন্যান্য শাকসবজি দিয়ে কাবাব স্যালাড তৈরি করা যেতে পারে।
৫. সুপ
হালকা সবজি সূপ: গাজর, টমেটো, শশা, মটরশুঁটি বা মাশরুম দিয়ে হালকা সবজি সূপ তৈরি করা যেতে পারে।
লেবু বা ডিম সূপ: এতে হালকা প্রোটিন থাকে, যা রোজার পর শরীরের শক্তি ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে।
৬. ডাল ও সেদ্ধ শাক
ডাল (মুগ, মুসুর বা ছোলার ডাল): সেহরি এবং ইফতারে ডাল খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এটি প্রোটিনের উৎস এবং হজমে সহায়তা করে।
শাকসবজি: সেদ্ধ শাক যেমন পালং শাক, মেথি শাক, কাটা আলু দিয়ে সবজি রান্না করা যেতে পারে।
৭. সূপ ও স্যালাডের সঙ্গে ব্রাউন রুটি
ব্রাউন রুটি: সাদা রুটির পরিবর্তে ব্রাউন রুটি বা হোল গ্রেইন রুটি খাওয়াই স্বাস্থ্যকর, কারণ এতে বেশি ফাইবার থাকে।
৮. হালকা মিষ্টি (ঝাল কম)
চিকেন বা মাটন রোল: চিকেন বা মটন না ভাজা, সেদ্ধ বা গ্রিল করা হয়ে স্লাইস করে রুটিতে পুর দিয়ে রোল বানানো যেতে পারে।
খেজুর ও কিসমিস: ইফতারে খেজুর ও কিসমিস খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। এতে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়।
ইফতারে ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করে, সহজে হজম হওয়া, পুষ্টিকর খাবার যেমন ফল, স্যালাড, সূপ, দই, সেদ্ধ ডাল, শাকসবজি ইত্যাদি রাখলে শরীর ভালো থাকবে এবং পরবর্তী সময়ে হজমের সমস্যা কমে যাবে।