পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ইসমাইল খান জেলার বান্নু সেনানিবাসে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছে। হামলায় আরও ৩০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) আল জাজিরার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক সেনা কর্মকর্তা আল জাজিরাকে জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেনা নিবাসের ওই এলাকায় দু’টি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি ঢুকে পড়ে। তার পরপরই ঘটে বিস্ফোরণ। জোরালো বিস্ফোরণের ধাক্কায় নিকটবর্তী একটি মসজিদ এবং একটি বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ইফতারের পর এ হামলা হয়। এতে সামরিক স্থাপনাটির দেয়াল ধসে আহত হয়েছেন অনেকে। আহতদের মধ্যে সেনা সদস্যরাও আছেন বলে শহরের পুলিশ প্রধান জিয়াউদ্দিনের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে সিএনএন।
বান্নু জেলা হাসপাতালের মুখপাত্র মুহাম্মদ নোমান বলেছেন, হামলায় ১২ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। সকলেই বেসামরিক নাগরিক। তারা ধসে পড়া ভবন এবং দেয়ালের নিচে আটকা পড়েন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিস্ফোরণে সেনাঘাঁটি ছাড়াও আশপাশের বাড়িঘর ও অন্য ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পাকিস্তানি তালেবানের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি জঙ্গিগোষ্ঠী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নুতে হামলার দায় স্বীকার করেছে এবং বলেছে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক ডজন সদস্য নিহত হয়েছে। সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি, তবে বান্নু জেলা হাসপাতাল জানিয়েছে যে অন্তত এক ডজন লোক মারা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা সেনাঘাঁটির প্রাচীরের কাছে নিজেদের বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেন। হামলার পর প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়ার পর আরো পাঁচ থেকে ছয়জন হামলাকারী সেনানিবাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের গুলি করে হত্যা করো হয়। তিনি আরও জানান, বিস্ফোরণে দুটি চার ফুট লম্বা গর্ত তৈরি হয় এবং এটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে এলাকার কমপক্ষে আটটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হামলার দায় স্বীকার করে জইশ আল-ফুরসান গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে বলেছে, বিস্ফোরণের উৎস ছিল বিস্ফোরক বোঝাই যানবাহন। উল্লেখ্য, রোববার পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানে এটি তৃতীয় জঙ্গি হামলা। পুলিশ অফিসার জাহিদ খান বলেন, হামলার সময় ধূসর ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় গোটা চত্ত্বর। দুটি বিস্ফোরণের পর ঘাঁটির ভিতরে গুলি চলতে থাকে। নিহতদের মধ্যে চারটি শিশুও রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হতাহতরা বিস্ফোরণস্থলের কাছাকাছি থাকতেন।
সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স, সিএনএন
এসজেড