গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় সরাসরি এগিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দিয়েছে হামাস। এদিকে ইসরায়েল আরো আলোচনার জন্য দোহায় একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। ফিলিস্তিনি অঞ্চল থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
রোববার (৯ মার্চ) হামাসের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা সপ্তাহের শেষে কায়রোতে মধ্যস্থতাকারীদের সাথে দেখা করেছেন। অবরুদ্ধ অঞ্চলে ‘কোনও বিধিনিষেধ বা শর্ত ছাড়াই’ পুনরায় প্রবেশের জন্য মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ভিত্তি তৈরির লক্ষ্যে চুক্তির ‘দ্বিতীয় ধাপের জন্য সরাসরি আলোচনা শুরু করার’ প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন উচ্চ-স্তরের প্রতিনিধিদল। একজন কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, হামাসের দ্বিতীয় ধাপের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজা থেকে সম্পূর্ণ ইসরাইলি প্রত্যাহার, অবরোধের অবসান, ভূখণ্ড পুনর্গঠন ও আর্থিক সহায়তা।
এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অফিস সোমবার দোহায় প্রতিনিধি পাঠাবে বলে জানিয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাড়াতে চায়।
এই যুদ্ধবিরতি গাজায় ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ থামিয়ে দেয়। ছয় সপ্তাহের তুলনামূলক শান্তির পর ১ মার্চ এই প্রাথমিক সময়কাল শেষ হয়, যার মধ্যে ২৫জন জীবিত জিম্মি ও আটটি মৃতদেহের বিনিময় এবং ইসরায়েলে আটক প্রায় ১,৮০০ ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি গাজায় গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য, আশ্রয় এবং চিকিৎসা সহায়তা সরবরাহকেও সক্ষম করে।
ইসরাইল পুনরায় সহায়তা সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর, জাতিসংঘের অধিকার বিশেষজ্ঞরা সরকারকে ‘ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করার অভিযোগ করেন। ট্রাম্প প্রশাসন হামাসের সঙ্গে নজিরবিহীন সরাসরি আলোচনা শুরুর বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে। এর আগে ১৯৯৭ সালে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার পর থেকে ওয়াশিংটন হামাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অস্বীকৃতি জানায়।
হামাসের হাতে আটক ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে ৫৮ জন গাজায় রয়েছেন, যার মধ্যে পাঁচজন মার্কিন। তবে এর মধ্যে চারজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। এডান আলেকজান্ডার নামে একজন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরব নেতাদের প্রস্তাবে গাজার পুনর্গঠন একটি ট্রাস্ট তহবিলের মাধ্যমে অর্থায়ন করার কথা বলা হয়, যেখানে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ অঞ্চলটি শাসন করবে। ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ ওয়াশিংটনে এই পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের এটি সম্পর্কে আরও আলোচনার প্রয়োজন, তবে এটি একটি সদিচ্ছার প্রথম পদক্ষেপ।’
ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য সৌদি আরব সফররত উইটকফ এই সপ্তাহে এই অঞ্চলে ফিরে আসবেন। ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা তেল আবিবে সপ্তাহান্তে তাদের নিয়মিত সমাবেশে সরকারকে যুদ্ধবিরতি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে।
সূত্র: এএফপি
এসজেড