ঢাকা | বঙ্গাব্দ

পানি আনতে পাড়ি দিতে হচ্ছে দীর্ঘ পথ

স্তর নেমে যাওয়ায় উপকূলীয় এলাকা সাতক্ষীরায় সুপেয় পানির সংকট বেড়ে গেছে।
  • | ১৪ মে, ২০২৪
পানি আনতে পাড়ি দিতে হচ্ছে দীর্ঘ পথ সংগৃহীত

স্তর নেমে যাওয়ায় উপকূলীয় এলাকা সাতক্ষীরায় সুপেয় পানির সংকট বেড়ে গেছে। বেশিরভাগ টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে পানি সংগ্রহে এলাকার মানুষদের যেতে হচ্ছে দীর্ঘ পথ। তবে জনপ্রতিনিধি বলছেন, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হলে সাতক্ষীরায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটের কিছুটা সমাধান হবে।


আশাশুনি এলাকার পাশেই বঙ্গোপসাগর, কিন্তু সেই লবণ পানি খাবার উপযোগী নয়। এর মধ্যে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সংকট তীব্র হয়েছে।


এখন পানি সংগ্রহের জন্য নারী ও শিশুদের ছুটতে হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। সরকারি প্রকল্পে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও পুকুরের পানি শোধন করে সরবরাহ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।


স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পানি না থাকায় তারা পানি কিনে খান অথবা অনেক দূর থেকে সংগ্রহ করেন। পানির অভাবে ক্ষতি হচ্ছে ফসলেরও।


টেকনিশিয়ান মোহাম্মদ রানা হোসেন বলেন, আশাশুনির মত শ্যামনগরেও পানি ও জমিতে বেড়েছে লবণাক্ততা। পানির স্তর ৩৫ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে গেছে। যে কারণে বেশিরভাগ টিউবওয়েল পানি উঠছে না।


সুপেয় পানি সমস্যা সমাধানে সরকার রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কাজ শেষ হলে উপকার পাবে এলাকার মানুষ, বলছেন সাবেক জনপ্রতিনিধি।


আশাশুনির খাজরা ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম জানিয়েছেন, এরইমধ্যে সংসদ সদস্য ৪৯ কোটি টাকার বরাদ্দ পেয়েছেন- সুপেয় পানি প্রকল্পের জন্য।


পরিবেশবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আশঙ্কাজনক হারে নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। এতে পানিতে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াসহ বাড়ছে পরিবেশ বির্পযয়ের শঙ্কা।


পানির সংকট একটি বৈশ্বিক সংকট। যতোই দিন যাচ্ছে এ সংকট আরো তীব্র হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে এ সংকট। বিশ্বের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী পানি সংকটে মধ্যে রয়েছে। আর সুপেয় পানির সংকটে রয়েছে ৭৬ কোটিরও বেশি মানুষ।


ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাবে সুপেয় পানির সুযোগবঞ্চিত জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম।


জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ হয় পর্যাপ্ত পানি পায় না। বলা হচ্ছে, আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ ৯শ’ ৩০ কোটি মানুষের মধ্যে ৭শ’ কোটিই পানির সমস্যায় পড়বেন।


কাজেই এ সমস্যা মোকাবেলা করতে হলে পানির অপচয় রোধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।