ঢাকা | বঙ্গাব্দ

রোজা ভেঙে ফেলা যায় যেসব কারণে

তবে কিছু নির্দিষ্ট কারণের কারণে ইসলাম রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি দিয়েছে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ মার্চ, ২০২৫
রোজা ভেঙে ফেলা যায় যেসব কারণে ফাইল ছবি

রমজান মাসে রোজা রাখা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। তবে কিছু নির্দিষ্ট কারণের কারণে ইসলাম রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি দিয়েছে। নিচে সেসব কারণ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো—


১. অসুস্থতা

যদি কেউ এমন অসুস্থ হন যে, রোজা রাখলে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে বা জীবন সংকটের মুখে পড়তে পারে, তাহলে তিনি রোজা ভেঙে ফেলতে পারেন। তবে সুস্থ হওয়ার পর তা কাযা করতে হবে।


২. সফর (মুসাফির হলে)

যদি কেউ মুসাফির (প্রায় ৮১ কিলোমিটার বা তার বেশি ভ্রমণকারী) হন এবং রোজা রাখা তার জন্য কষ্টদায়ক হয়, তাহলে তিনি রোজা ভেঙে খেতে পারেন। তবে পরে সেই রোজার কাযা আদায় করতে হবে।


৩. গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মা

যদি কোনো নারী গর্ভবতী হন বা সন্তানকে দুধ খাওয়ান এবং রোজার কারণে নিজের বা শিশুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে তিনি রোজা ভেঙে খেতে পারেন। পরবর্তীতে কাযা আদায় করতে হবে।


৪. মাসিক ও প্রসবজনিত রক্তস্রাব

নারীদের হায়েজ (মাসিক) বা নিফাস (সন্তান জন্মের পর রক্তস্রাব) চলাকালে রোজা রাখা নিষিদ্ধ। এ সময় রোজা ভেঙে ফেলতে হয় এবং পরবর্তীতে কাযা করতে হয়।


৫. প্রবল ক্ষুধা বা তৃষ্ণা (জীবন রক্ষার প্রয়োজনে)

যদি কেউ এমন পরিস্থিতিতে পড়েন যেখানে প্রবল ক্ষুধা বা তৃষ্ণার কারণে তার জীবন হুমকির মুখে পড়ে, তাহলে তিনি রোজা ভেঙে খেতে পারেন। পরে কাযা আদায় করতে হবে।


৬. ভুলবশত বা বাধ্য হয়ে খাওয়া-দাওয়া করা

যদি কেউ ভুলে কিছু খেয়ে ফেলেন, তাহলে রোজা ভাঙবে না। তবে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে খান, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাফফারা দিতে হবে (একাধারে ৬০ দিন রোজা রাখা বা ৬০ জন দরিদ্রকে খাওয়ানো)।


৭. বমি হওয়া

যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি আসে, তাহলে রোজা ভাঙবে না। তবে কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করেন, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।


৮. সঙ্গম (দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন)

রোজা অবস্থায় যদি কেউ স্বেচ্ছায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। এক্ষেত্রে কাযা ও কাফফারা দুটোই আদায় করতে হবে।


৯. ইনজেকশন বা রক্ত গ্রহণ

যদি কেউ এমন কোনো ইনজেকশন গ্রহণ করেন, যা পুষ্টি জোগায়, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে। তবে সাধারণ ওষুধ বা ইনসুলিন ইনজেকশন দিলে রোজা ভাঙবে না।


রমজানের রোজা ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ। তবে ইসলামে এমন কিছু অবস্থা বিবেচনা করা হয়েছে, যেখানে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ। তবে সেক্ষেত্রে যথাযথভাবে কাযা বা কাফফারা আদায় করতে হয়। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা এবং শরীয়তের বিধান মেনে চলাই প্রত্যেক মুসলিমের দায়িত্ব।


thebgbd.com/NIT