ইসলামে মানবতার সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে যাকাত বিতরণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু বিধান রয়েছে। পবিত্র মাহে রমজানে দান-খয়রাত ও মানবসেবার গুরুত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সারাজীবন দানশীল ছিলেন, বিশেষত রমজান মাসে তিনি দানের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতেন। হাদিস অনুযায়ী, রমজান মাসে প্রতিটি ভালো কাজের সওয়াব ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
তবে প্রশ্ন উঠতে পারে, যাকাতের টাকা কি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দেওয়া যাবে?
মুহাম্মাদ এজহারুল হক (প্রিন্সিপাল,গাওছিয়া ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসা, ঢাকা) তিনি এক অনুষ্ঠানে বলেন, ইসলাম মানবতার ধর্ম, তাই সাধারণ দান-সদকা বা নফল সাহায্য-সহযোগিতা অমুসলিমদের দেওয়া যাবে। যদি কোনো অমুসলিম বিপদে পড়ে, ইসলামের শিক্ষানুযায়ী তাকে সাহায্য করা অবশ্যই একটি মহৎ কাজ। তবে যাকাত একটি বাধ্যতামূলক ইবাদত, যা কেবল মুসলিম গরিব, অভাবগ্রস্ত ও নির্ধারিত আট শ্রেণির মানুষের জন্য প্রযোজ্য। তাই যাকাতের অর্থ অমুসলিমদের দেওয়া যাবে না।"
কুরআন মাজিদে জাকাত ব্যয়ের নির্দিষ্ট আটটি খাত উল্লেখ রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মূলত সদকাত হলো ফকির, মিসকিন, যাকাত কর্মী, অনুরক্ত ব্যক্তি ও নওমুসলিম, ক্রীতদাস, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে (ইসলামের সুরক্ষার জন্য) ও বিপদগ্রস্ত বিদেশি মুসাফির ও পথসন্তানদের জন্য। এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞানী ও পরম কৌশলী।’ (সুরা-৯ তাওবাহ, আয়াত: ৬০)
ওই আটটি খাতের মধ্যে সময়ের প্রয়োজন ও ফলাফল বিবেচনা করে নিকটাত্মীয়, প্রতিবেশী ও অন্যদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এতে যাকাত-ফিতরা আদায় হওয়ার পাশাপাশি নিয়াত অনুযায়ী ক্ষেত্রবিশেষ সওয়াবের পরিমাণও বাড়বে।
সূত্র: হিদায়া ১/২০৭; ইনায়াহ ২/২১৪; রদ্দুল মুহতার ২/৩৫২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪২
thebgbd.com/NIT