ঢাকা | বঙ্গাব্দ

কোন ধরনের বালিশে ঘুমানো উচিত

বালিশের নির্বাচন আপনার ঘুমের গুণগত মান ও শারীরিক সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলে।
  • | ১৬ মার্চ, ২০২৫
কোন ধরনের বালিশে ঘুমানো উচিত কেমন বালিশে ঘুমানো উচিত

বালিশের নির্বাচন আপনার ঘুমের গুণগত মান ও শারীরিক সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলে। সঠিক বালিশ বেছে নিলে ঘুমের সময় আপনার মেরুদণ্ডের সঠিক অবস্থান নিশ্চিত হয়, যা শারীরিক ব্যথা থেকে মুক্ত রাখে। নিচে বিভিন্ন ধরনের বালিশের উপকারিতা ও কারা কোন ধরনের বালিশে ঘুমালে ভালো হবে তা তুলে ধরা হলো—


১. ফ্ল্যাট বালিশ বা কম উচ্চতার বালিশ: কিসে উপকারী: যদি আপনি পিঠে শুয়ে ঘুমান, তাহলে কম উচ্চতার বা ফ্ল্যাট বালিশ ব্যবহার করা ভালো। এটি মাথা, ঘাড় ও মেরুদণ্ডকে সোজা রাখতে সাহায্য করে, ফলে পিঠের ব্যথা বা ঘাড় ব্যথা কমে।


কেন ব্যবহার করবেন: পিঠে শুয়ে ঘুমালে মেরুদণ্ডের সোজা অবস্থান বজায় থাকে, এবং অতিরিক্ত উচ্চতার বালিশ ঘাড়ের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে।


২. মধ্যম উচ্চতার বালিশ: কিসে উপকারী: যদি আপনি একপাশে শুয়ে ঘুমান, তাহলে মধ্যম উচ্চতার বালিশ উপযুক্ত। এটি ঘাড়ের সমর্থন প্রদান করে এবং মেরুদণ্ডকে সোজা রাখে।


কেন ব্যবহার করবেন: একপাশে ঘুমানোর সময়, বালিশটির উচ্চতা এমন হতে হবে যাতে ঘাড় ও কাঁধের মাঝের দূরত্ব পূর্ণ হয়, এবং শরীরের সোজা রেখা বজায় থাকে।


৩. উচ্চ বা ফুলানো বালিশ: কিসে উপকারী: যদি আপনি পেটের ওপর শুয়ে ঘুমান, তাহলে কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ বা ফুলানো বালিশ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এটি খুব বেশি উপকারী নয় কারণ পেটের ওপর শোয়া শ্বাসকষ্ট তৈরি করতে পারে এবং পিঠের ব্যথা বাড়াতে পারে।


কেন ব্যবহার করবেন: পেটের ওপর শুয়ে ঘুমানো যতটা সম্ভব পরিহার করা উচিত, কারণ এটি মেরুদণ্ডের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।


৪. মেমরি ফোম বালিশ: কিসে উপকারী: মেমরি ফোম বালিশ আপনার মাথার ও ঘাড়ের গঠন অনুসারে আকার নেয় এবং শরীরের চাপ সমানভাবে বণ্টন করে, যা ঘাড়ের ব্যথা বা আঘাত কমাতে সাহায্য করে। এটি বিশেষভাবে ঘাড় ও পিঠের ব্যথায় সহায়ক।


কেন ব্যবহার করবেন: এটি এমন লোকদের জন্য উপকারী যারা নিয়মিত ঘাড়ের বা পিঠের ব্যথায় ভোগেন, কারণ এটি মাথা ও ঘাড়কে সঠিকভাবে সমর্থন প্রদান করে।


৫. বাঁকা বা অ্যানাটমিকাল বালিশ: কিসে উপকারী: অ্যানাটমিকাল বালিশগুলো বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে মাথা, ঘাড় ও মেরুদণ্ডের সঠিক অবস্থান বজায় থাকে। এটি ঘাড় ও কাঁধে সমর্থন দেয় এবং মেরুদণ্ডের সোজা অবস্থান নিশ্চিত করে।


কেন ব্যবহার করবেন: যারা দীর্ঘ সময় ধরে পিঠে বা একপাশে ঘুমান, তাদের জন্য এটি একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।


৬. কটন বা ন্যাচারাল ফিলিং বালিশ: কিসে উপকারী: কটন বা ন্যাচারাল ফিলিং বালিশগুলো বেশ আরামদায়ক এবং স্বস্তিদায়ক, কারণ এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য উপযোগী এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।


কেন ব্যবহার করবেন: গরম আবহাওয়ার মধ্যে বা যারা সহজে তাপমাত্রায় অস্বস্তি অনুভব করেন, তাদের জন্য এই ধরনের বালিশ উপকারী।


৭. পিলো টপ বালিশ: কিসে উপকারী: কিছু বালিশের উপরের অংশ অতিরিক্ত নরম এবং নিচের অংশ শক্ত থাকে, যা মাথার ওপর চাপ কমিয়ে ঘাড় ও পিঠে সঠিক সমর্থন দেয়।


কেন ব্যবহার করবেন: এটি তাদের জন্য উপকারী যারা একপাশে বা পিঠে শুয়ে ঘুমান এবং যারা দীর্ঘ সময় ঘুমানোর পরেও আরামদায়ক অনুভব করতে চান।


সঠিক বালিশ বেছে নেওয়ার পরামর্শ:


ঘাড় ও মেরুদণ্ডের অবস্থান: সঠিক বালিশের উচ্চতা ও আকৃতি নির্বাচন করুন যাতে ঘাড় সোজা থাকে এবং মেরুদণ্ডের সঠিক অবস্থান বজায় থাকে।


ঘুমানোর অভ্যাস: আপনার ঘুমানোর অভ্যাস অনুযায়ী বালিশ নির্বাচন করুন (পিঠে, একপাশে বা পেটের ওপর শুয়ে)।


প্রাকৃতিক উপাদান: ন্যাচারাল ফিলিং বা অর্গানিক বালিশ চেয়ে synthetic উপাদানের তুলনায় বেশ আরামদায়ক হতে পারে।


সঠিক বালিশে ঘুমানো শুধুমাত্র ঘুমের জন্যই নয়, আপনার দৈনন্দিন জীবনের আরামদায়ক অনুভূতি বজায় রাখতে সাহায্য করে।