দীর্ঘদিন মহাকাশে থেকে নভোচারী সুনি উইলিয়ামসের চুল দ্রুত পেকে গেছে। পৃথিবীতে ফেরার পরে শীর্ণ শরীর, ধূসর চুলের সুনিকে দেখে অবাক হন অনেকে। গত ৯ মাসে অনেকটা বুড়িয়ে গেছেন তিনি। কিন্তু কেন?
নাসা জানিয়েছে, মহাকাশে টানা বসবাসের কারণে স্থায়ী প্রভাব পড়ে শরীরে। দেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তো বটেই, চামড়া, চুল ও বাইরের চেহারাও বদলে যায় বহু ক্ষেত্রে। নাসা বলেছে, ‘ভাবুন, যদি শরীরের পরিবর্তনগুলো খুব দ্রুত ঘটে যায়, অর্থাৎ কয়েক দশকের স্বাভাবিক জীবনচক্র যদি কয়েক সপ্তাহেই ঘটে তা হলে কেমন হবে? নভোচারীদের ক্ষেত্রে তেমনটাই ঘটে। রাতারাতি দাড়ি-গোঁফ গজিয়ে যেতে পারে, অল্প দিনেই পেকে যেতে পারে সব চুল, অথবা অনেক আগেই দেখা দিতে পারে মেনোপজ।’
নাসার আরও বলেছে, ‘দীর্ঘদিন মহাকাশে বাস শরীরে বড়সড় বদল আনতে পারে। পেশি ক্ষয়, হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া থেকে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়া— পৃথিবীতে যা যা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবে হয়, মহাকাশে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে তা ঘটে যেতে পারে।’
২০১৬ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ-এর একটি পরীক্ষায় গবেষকেরা জানান, মহাকাশে থাকার সময় চুলের ফলিকলের জিনের প্রকৃতি বদলে যায়। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ইঁদুরদের উপরে আরও একটি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মহাশূন্যে থাকাকালীন চামড়া মোটা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া, একটানা মহাকাশে বসবাসের সময়ে সূর্যের দীর্ঘ বিকিরণের কারণে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা বেড়ে যায়।
১৯ মার্চ পৃথিবীতে পৌঁছনোর পরে কিছু গোপন ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে নভোচারীদের। সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি ছবিতে সুনির হাতে ড্রিপ চ্যানেল দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৯ মাসে সুনীতার পেশি ক্ষয় হয়ে থাকতে পারে। তার শীর্ণ শরীর দেখে তেমনটাই মনে করা হচ্ছে। হয়তো সে কারণেই বিশেষ চিকিৎসা চলছে নভোচারীর।
সূত্র: রয়টার্স
এসজেড
