ঢাকা | বঙ্গাব্দ

‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নয়, এবার ঢাবিতে হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে এবার পহেলা বৈশাখে আয়োজিত শোভাযাত্রার নাম রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১১ এপ্রিল, ২০২৫
‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নয়, এবার ঢাবিতে হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ ফাইল ছবি

বাংলা নববর্ষ বরণের অন্যতম প্রধান আয়োজন ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ এবার থেকে নতুন নামে অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে এবার পহেলা বৈশাখে আয়োজিত শোভাযাত্রার নাম রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।


আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এবারের শোভাযাত্রার মূল স্লোগান হবে—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। শোভাযাত্রায় বাংলার চিরায়ত লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হবে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে ইঙ্গিত করে জানানো হয়, দেশে যেন আর কখনো ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে—সেই বার্তাও থাকবে আয়োজনে।


১৯৮৯ সালে প্রথমবার ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামে পহেলা বৈশাখে মিছিলের আয়োজন করেছিল চারুকলা অনুষদ। পরে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময়ে এর নামকরণ হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। তখন থেকে টানা তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই নামে পরিচিত ছিল উৎসবটি। তবে এ বছর থেকে নতুন নামে ফিরে আসছে এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজন।


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ এবং বিভিন্ন কমিটির সদস্যরা।


এবারের শোভাযাত্রার আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর অন্তর্ভুক্তিমূলক চরিত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত এক সভায় জানানো হয়েছিল, চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, গারোসহ ২৭টি জাতিগোষ্ঠী এবারের আয়োজনে অংশ নেবে। এই ঘোষণা অনুযায়ী শোভাযাত্রায় বাঙালিদের পাশাপাশি এসব জাতিগোষ্ঠীর নিজ নিজ সংস্কৃতির প্রতীক ও শিল্পও তুলে ধরা হবে।


সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছেন, বর্ষবরণ উৎসবকে আরও বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় করতে ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কনসার্ট এবং ১৪ এপ্রিল নববর্ষের দিন ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবরে ‘সুরের ধারা’র পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে।


চারুকলার এই শোভাযাত্রা শুধু একটি সাংস্কৃতিক আয়োজন নয়, বরং তা জাতীয় ঐক্য, অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং সমাজে শুভবোধ জাগ্রত করার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এবার নতুন নামে হলেও সেই চেতনাই বজায় রাখার অঙ্গীকার নিয়েছে আয়োজকেরা।


thebgbd.com/NIT