আল্লাহ তাআলার সর্বশেষ ও চূড়ান্ত গ্রন্থ পবিত্র কোরআন— যা সমগ্র মানবজাতির জন্য হিদায়াত, নূর এবং রহমতের উৎস। এই মহাগ্রন্থ পাঠ করা, বোঝা এবং এর উপর আমল করা মুসলমানদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। কোরআন পড়ার ফজিলত এবং তা থেকে দূরে থাকার পরিণতি নিয়ে কোরআন ও হাদীসে অসংখ্য বর্ণনা পাওয়া যায়।
কোরআনের ফজিলত: কোরআনের বাণীতে
হিদায়াত ও রহমতের উৎস
"এই কিতাব সন্দেহাতীত; এটি মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াতস্বরূপ।" (সূরা বাকারা: ২)
চিকিৎসা ও আরোগ্য
"আমি কোরআনে যা অবতীর্ণ করি, তা হলো মু’মিনদের জন্য আরোগ্য ও দয়া।" (সূরা বনি ইসরাইল: ৮২)
আলো ও পথপ্রদর্শক
"নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে আলো ও এক স্পষ্ট কিতাব।" (সূরা মায়েদা: ১৫)
হাদীসে কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব
প্রতিটি অক্ষরের জন্য সওয়াব
রাসূল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তিলাওয়াত করে, তার জন্য একটি সওয়াব আছে। এবং একটি সওয়াব দশটি গুণে বৃদ্ধি পায়। আমি বলি না যে, ‘আলিফ-লাম-মীম’ একটি অক্ষর; বরং ‘আলিফ’ একটি অক্ষর, ‘লাম’ একটি অক্ষর, ‘মীম’ একটি অক্ষর।” (তিরমিজি: ২৯১০)
কোরআন সুপারিশ করবে
“কোরআন কিয়ামতের দিনে তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে।” (মুসলিম: ৮০৪)
আহলে কোরআন আল্লাহর আপনজন
“আহলে কোরআন (যারা কোরআন পড়ে, শেখে ও তার ওপর আমল করে) – তারা আল্লাহর আপনজন ও বিশেষ বান্দা।” (ইবনে মাজাহ: ২১৫)
তিলাওয়াতের আদব ও পদ্ধতি
ওজু থাকা ও পাক-পবিত্র থাকা।
আদবসহ বসা ও মনোযোগ সহকারে পাঠ করা।
আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ে শুরু করা।
তাজবীদ অনুযায়ী শুদ্ধ উচ্চারণে পড়া।
বুঝে পড়ার চেষ্টা করা ও অনুধাবন করা।
কোরআন থেকে বিমুখ হওয়ার পরিণতি
“আমার উম্মতের একটি দল কোরআনকে পরিত্যাগ করেছে।” (সূরা ফুরকান: ৩০)
যারা কোরআন পড়ে না, বোঝে না, বা আমল করে না— তাদের ব্যাপারে কুরআন নিজেই অভিযোগ জানাবে কিয়ামতের দিনে।
পবিত্র কোরআন শুধু একটি ধর্মীয় গ্রন্থ নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এর তিলাওয়াত হৃদয়ে প্রশান্তি আনে, আত্মাকে বিশুদ্ধ করে এবং আমাদের পথ দেখায়। প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় কোরআন পাঠে ব্যয় করা উচিত এবং কোরআনের আলোকে জীবন পরিচালিত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
নিয়মিত কোরআন পড়ুন, বোঝার চেষ্টা করুন এবং নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করুন। কোরআনের আলোয় জীবন গড়ুন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে কোরআনের প্রকৃত প্রেমিক বানাক। আমিন।
thebgbd.com/NA