ঢাকা | বঙ্গাব্দ

মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত, দেশে প্রভাব ঠেকাতে প্রস্তুত সরকার

মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে বাংলাদেশে প্রভাব পড়বে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
  • | ০৮ মে, ২০২৪
মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত, দেশে প্রভাব ঠেকাতে প্রস্তুত সরকার ফাইল ছবি

মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে বাংলাদেশে প্রভাব পড়বে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।


বুধবার সংসদে প্রশ্নোত্তরপর্বে সংসদ নেতা বলেন, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আভাস দেখা যাচ্ছে, তা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা যায়। দেশের অর্থনীতিতে এই সংঘাতের কিছুটা প্রভাব আসতে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীলতা, বাজার ব্যবস্থাপনায় অসামঞ্জস্যতা এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সূত্রে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পণ্যের সাপ্লাই-চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মূলত ইরান বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পরিবহন খরচ বাড়তে পারে। এতে পণ্য তৈরি ও সরবরাহের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে রপ্তানিকারকরা কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে পারে।


মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের আশংকার বিষয়ে দেশের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকে যেন মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ঘটনাপ্রবাহের ওপর নজর রাখে এবং এ বিষয়ে নিজ নিজ করণীয় নির্ধারণ করে। সংঘাত দীর্ঘ হলে কোন কোন সেক্টরে প্রভাব পড়তে পারে তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।


তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো সংঘাত বা সংঘাতের খবর জ্বালানি তেলের বাজারকে প্রভাবিত করে। এতে পণ্যের জাহাজ ভাড়া বাড়ে। যা আমদানি ব্যয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে। সার আমদানি ব্যয়ে প্রভাব পড়ে। এতে বিকল্প উৎস হিসেবে চীন, মরক্কো, তিউনেশিয়া, কানাডা, রাশিয়া ইত্যাদি দেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করা হবে।


তিনি আরো বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সংকট আরও ঘনীভূত ও দীর্ঘায়িত হলে তা বাংলাদেশের উপর অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে বিধায় সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে টিবিসির কার্যক্রম সম্প্রসারণ সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, টিসিবিতে যে লোকবল আছে সেটা দিয়ে আমরা মানুষের যে সেবা করে যাচ্ছি সেটাই যথেষ্ট। আর সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায়, বিশেষ করে যারা সীমিত আয়ের তাদের কষ্ট হচ্ছে। তবে, গ্রামে যারা নিজেরা উৎপাদন করতে পারেন বা করছেন তাদের খুব একটা কষ্ট নেই, হাহাকারও নেই।


সরকারি দলের সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় সারাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে এবং জনসাধারণ উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার সুফল ভোগ করতে পারছেন।


স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট। সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সব প্রকারের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিকে অনেকাংশে সংযত করতে পেরেছি।


তিনি বলেন, বিশ্ববাজারের কয়েকটি পণ্য যেমন জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গমসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বাড়ায় আমাদের দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের ফলে সংকট ঘনীভূত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতির উপর বাহ্যিক প্রভাব কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিলাসদ্রব্য বা অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যে এলসি স্থাপন সহজীকরণ করা হয়েছে।