ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে যেভাবে হত্যা করা হয়

নড়াইলের লোহাগড়ার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শিকদার মোস্তফা কামালকে (৪৮) গুলি করে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।
  • | ১৭ মে, ২০২৪
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে যেভাবে হত্যা করা হয় সংগৃহীত

নড়াইলের লোহাগড়ার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শিকদার মোস্তফা কামালকে (৪৮) গুলি করে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।


প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করেই পরিকল্পিতভাবে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।


গ্রেপ্তার চারজন হলেন- প্রধান আসামি শুটার সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)।


চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজানের সংবাদ সম্মেলন করেন র‍্যাব কর্মকর্তা কমান্ডার আরাফাত।


তিনি বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতা ছিল। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।


গত ১১ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার কুন্দশি এলাকায় মোস্তফা কামালের ওপর হামলা করা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে দশটার দিকে তার মৃত্যু হয়।


আরাফাত ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে র‍্যাব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করার জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব-৬, র‌্যাব-৭ ও র‌্যাব-১০ এর যৌথ অভিযানে ওই হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যতম আসামি ও শুটারসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।


তিনি বলেন, মূলত ২০২২ সালের বিরোধের জের ধরে ভিকটিম মোস্তফা কামাল ও আকবর হোসেন লিপনের অনুসারীদের মধ্যে মারামারি হয়। সেই মারামারিতে লিপনের একটি হাত কাটা পড়ে। পরে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা কামালের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন।


লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে বলে জানান আরাফাত।


বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সাজেদুলসহ অন্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু ও রাম দাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে ওৎ পাতে। মোস্তফা কামাল পৌঁছামাত্রই পিস্তল দিয়ে তিনটি গুলি করেন সাজেদুল, যার মধ্যে দুইটি গুলি লাগে ভিকটিমের বুকে ও পিঠে।


গ্রেপ্তার রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় শ্রমিক। তিনি সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ মারামারি, ছিনতাই ও মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার জন্য তাকে এক লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল বলে জানান আরাফাত ইসলাম।


বলেন, গ্রেপ্তার পাভেল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তিনিও লিপনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। আর মামুন মোল্যা পেশায় একজন চালক। লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।


তার কাছে থাকা ছুরি, চাকু ও অন্যান্য দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র মোস্তফা কামালকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলায় ব্যবহার করা হয় বলেও জানান তিনি।