গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে মত দিয়েছেন স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে মানুয়েল আলবারেস। রোববার ইউরোপীয় ও আরব দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাদ্রিদ থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
গাজায় চলমান সামরিক অভিযান তীব্র হওয়ার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের মিত্ররাও সেখানে আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে। বৈঠকে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলবারেস বলেন, যুদ্ধ থামাতে এখনই তেল আবিবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বিবেচনার সময় এসেছে। আলবারেস বলেন, ‘এখন নীরবতা মানেই হত্যাযজ্ঞে মদদ দেওয়া, সে কারণেই এই বৈঠক’।
বৈঠকে ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি ও ইতালিসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর পাশাপাশি মিসর, জর্ডান, সৌদি আরব, তুরস্ক, মরক্কো, আরব লীগ এবং ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। স্পেনের মতোই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া নরওয়ে, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও ব্রাজিলের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে অংশ নেন।
এর আগে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজার যুদ্ধ ‘অমানবিক’ ও ‘অযৌক্তিক’। তিনি বলেন, ‘গাজায় শর্তহীন ও সীমাহীনভাবে এবং ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া ত্রাণ প্রবেশ করতে দিতে হবে।’ সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তার দেশ এই চুক্তির ‘তাৎক্ষণিক স্থগিতাদেশ’ চাইবে। আলবারেস আরও জানান, স্পেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞাও চাইবে।
বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আরব দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-নোয়েল বারো। এসময় তিনি যুদ্ধবিরতি, ত্রাণ প্রবেশ ও হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে সমন্বিত চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান।
ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে, বারো আগামী সপ্তাহে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভারসেন আগাবেকিয়ান শাহিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের সভাপতিত্বে আগামী মাসে হতে যাওয়া ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনের আগে এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ঘোষণা দেন, তার দেশ জাতিসংঘে এমন খসড়া প্রস্তাবগুলোর পক্ষে দাঁড়াবে যা গাজার ত্রাণ সরবরাহ দ্রুততর করার পাশাপাশি ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মানবিক দায়বদ্ধতার জন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে। গত বছর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে কিছু ইউরোপীয় মিত্রদের বিরাগভাজন হওয়া স্পেন এবার গাজা ইস্যুতে আরো বড় ধরণের আন্তর্জাতিক ঐক্য গড়ে তুলতে চায়।
সূত্র: এএফপি
এসজেড