রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় বর্ষে গড়ানোর মধ্যে চীনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন। দেশটি দাবি করেছে রাশিয়ার সামরিক শিল্পে সরাসরি সহায়তা করছে চীন। যদিও বেইজিং বরাবরের মতোই এই অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকার কথা বলেছে। সোমবার কিয়েভ-ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইউক্রইনফর্মকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ওলেহ ইভাশচেঙ্কো বলেছেন, তাদের হাতে এমন প্রমাণ রয়েছে যা চীনের সহযোগিতার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কিয়েভ থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
ইভাশচেঙ্কো দাবি করেছেন, চীন অন্তত ২০টি রুশ সামরিক কারখানায় অত্যাবশ্যক যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল সরবরাহ করছে। এর মধ্যে রয়েছে বিশেষ যন্ত্র তৈরির উপাদান, রাসায়নিক উপকরণ, বারুদ এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে এভিয়েশন খাতে পাঁচটি যৌথ প্রকল্পের আওতায় যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম ও কারিগরি তথ্যের আদান-প্রদান হয়েছে। এছাড়া ছয়বার রাশিয়ায় বিপুল পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ পাঠানো হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু তিনি এর স্বপক্ষে বিস্তারিত তথ্য দেখাতে পারেননি।
তার ভাষায়, চলতি বছরের শুরু পর্যন্ত রাশিয়ার ড্রোনে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের ৮০ শতাংশই এসেছে চীন থেকে। এসব যন্ত্রাংশ পাঠানো হয় বিভিন্ন ছায়া কোম্পানির মাধ্যমে। যাদের অনেক সময় প্রতিষ্ঠানের নাম ও পণ্যের পরিচয় পরিবর্তন করে ফেলা হয়। এর আগেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, চীন রাশিয়াকে বারুদ ও ড্রোন তৈরির উপকরণ দিচ্ছে। এমনকি কিছু চীনা নাগরিক রাশিয়ার ড্রোন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তবে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। তারপরও ইউক্রেন সম্প্রতি তিনটি চীনা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধ শুরুর পর আন্তর্জাতিকভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার দাবি করলেও চীন ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আবহে রাশিয়ার জন্য প্রধান উপকরণ সরবরাহকারীর ভূমিকা পালন করছে চীন।
সূত্র: এএফপি
এসজেড