মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপন স্বপ্নের অংশ হিসেবে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স আজ (মঙ্গলবার) তাদের মেগা রকেট স্টারশিপ-এর চতুর্থ পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চালাতে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, এই পরীক্ষার পটভূমিতে রয়েছে পূর্ববর্তী দুটি ব্যর্থতা—যেখানে রকেটের ওপরের স্তরগুলি বিস্ফোরিত হয়ে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ধ্বংসাবশেষ বর্ষণ করে এবং আকাশপথে বিঘ্ন ঘটায়। এই প্রেক্ষাপটে আজকের উৎক্ষেপণকে সফল করতে কোম্পানিটির ওপর রয়েছে ব্যাপক চাপ।
উৎক্ষেপণের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট (গ্রিনিচ সময় রাত ১১টা ৩০ মিনিট)। স্থান, টেক্সাসের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলবর্তী ‘স্টারবেস’ নামক নতুন ঘোষিত শহর, যেখানে স্পেসএক্সের উৎক্ষেপণ ঘাঁটি অবস্থিত।
১২৩ মিটার (৪০৩ ফুট) লম্বা স্টারশিপ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী উৎক্ষেপণ যান। এটি শুধু এলন মাস্কের বহুগ্রহে বসতি গঠনের স্বপ্নের প্রতীক নয়, বরং নাসার ‘আর্তেমিস-৩’ মিশনের চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রার জন্য নির্ধারিত মহাকাশযান হিসেবেও নির্বাচিত।
স্পেসএক্স জানায়, তারা ইতোমধ্যে তিনবার সফলভাবে ‘সুপার হেভি’ বুস্টারটিকে উৎক্ষেপণ টাওয়ারের রোবোটিক বাহুতে ধরতে সক্ষম হয়েছে—যা ভবিষ্যতের পুনঃব্যবহারযোগ্য উৎক্ষেপণ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে আজকের উৎক্ষেপণে ব্যবহৃত ‘সুপার হেভি’ বুস্টারটি পূর্বে ব্যবহৃত। ফলে এটিকে আজ উদ্ধার করা হবে না; বরং গালফ অব মেক্সিকোতে এটি সাগরে নামবে। রকেটের ওপরের স্তরটি পৃথিবীর অর্ধেক প্রদক্ষিণ করে ভারত মহাসাগরে নামার চেষ্টা করবে। এই প্রথম স্টারশিপ একটি পরীক্ষামূলক পে-লোড (ছদ্ম স্টারলিংক স্যাটেলাইট) নিয়ে যাত্রা করবে, যা পরে বায়ুমণ্ডলে পুড়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিডিজিজি) উৎক্ষেপণের অনুমোদন দিয়েছে। তারা বাতাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আকাশপথ বন্ধের অঞ্চল প্রায় দ্বিগুণ করে ১,৬০০ নটিক্যাল মাইলে বাড়িয়েছে। এর মধ্যে পড়েছে যুক্তরাজ্য, তুর্কস অ্যান্ড কাইকোস, বাহামা, মেক্সিকো ও কিউবার আকাশসীমা।
স্পেসএক্সের বার্তা— ‘অগ্রগতি সবসময় বড় করে আসে না’ স্পষ্টতই বুঝিয়ে দেয়, তারা ব্যর্থতা থেকে শিখে এগিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। উৎক্ষেপণ সফল হলে এটি হবে স্টারশিপের ভবিষ্যতের মঙ্গল অভিযানের দিকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সূত্র: এএফপি
এসজেড