চেক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের চুক্তিটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনি সমস্যায় পড়ায় সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কোম্পানি কোরিয়া হাইড্রো অ্যান্ড নিউক্লিয়ার পাওয়ার (কেএইচএনপি) ।
সিউল থেকে এএফপি জানিয়েছে, কেএইচএনপি মঙ্গলবার বলেছে যে চেক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তদন্তে আটকে যাওয়ায় তারা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে। এতে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধেও প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। গত ২ মে ইউরোপীয় কমিশন চেক সরকারকে চুক্তি স্থগিত রাখার আহ্বান জানায়। গত বছরের জুলাইয়ে হওয়া টেন্ডারে ফ্রান্সের ইডিএফ’কে হারিয়ে কেএইচএনপি দুইটি পারমাণবিক ইউনিট নির্মাণের দায়িত্ব পায়।
তবে ইডিএফ চেক প্রতিযোগিতা কমিশনের কাছে অভিযোগ করে চেক আদালতে মামলা দায়ের করে ওই চুক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায়, তারা যাচাই করছে কেএইচএনপি কি কোনও বিদেশি আর্থিক অনুদান পেয়েছে। যা প্রতিযোগিতার স্বচ্ছতায় প্রভাব ফেলতে পারে। এতে একটি আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হতে পারে।
কেএইচএনপি জানায়, তারা ইউরোপীয় কমিশনকে তাদের জবাবে বলেছে, ‘টেন্ডার প্রক্রিয়া ছিল একেবারেই স্বচ্ছ এবং তারা কোরিয়ান সরকারের কাছ থেকে এমন কোনো ভর্তুকি পায়নি যা প্রতিযোগিতায় প্রভাব ফেলতে পারে।’ তারা আরও জানায়, যদি ইইউ বিদেশি ভর্তুকি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত শুরু করে এবং চুক্তির ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাহলে আমরা ইউরোপীয় আদালতে তদন্ত স্থগিত ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য অবিলম্বে আবেদন করব।
তারা আরও জানায়, কোরিয়ান সরকারের কাছ থেকে বিশেষ বাণিজ্যিক সহায়তার অনুরোধ জানানোসহ সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ বিবেচনা করা হচ্ছে। কেএইচএনপি’র একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’
এদিকে সিউলের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইউরোপে কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর সব প্রকল্পই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডাব্লিউটিও) এবং ইইউ নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কেএইচএনপি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানায়, তারা বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। বর্তমানে, ইডিএফ-এর করা মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত চেক আদালতের আদেশে চুক্তি স্থগিত রয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ চেক প্রজাতন্ত্রের ডুকোভানি পারমাণবিক কেন্দ্রে দুটি ইউনিট নির্মাণের কথা ছিল কেএইচএনপি’র। যার প্রতিটির আনুমানিক খরচ প্রায় ২০০ বিলিয়ন চেক কোরুনা (প্রায় ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। চেক সরকার চুক্তিটি ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে চূড়ান্ত করতে চাইলেও ইডিএফ-এর আপিলের কারণে দেরি হয়েছে। সিইজেড জানায়, তারা আশা করছে ২০২৯ সালে নির্মাণকাজ শুরু হবে এবং ২০৩৬ সালে প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা যাবে।
সূত্র: এএফপি
এসজেড