ইসলামে কোরবানি ও আকিকা দুটো আলাদা ইবাদত ও বলিদানের প্রথা। কোরবানী ঈদুল আযহা’র বিশেষ ইবাদত যেখানে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করা হয়, আর আকিকা নবজাতক শিশুর জন্য তাঁর নামকরণের দিনে পশু কোরবানি দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের রীতি। কোরআন-হাদিস ও ফিকহী গ্রন্থে এই দুই প্রথার আলাদা বিধান রয়েছে।
কোরআনে সরাসরি কোরবানীর নিয়ম ও পশুর ধরন উল্লেখ আছে, যেমন সূরা আল-হাজ্জ ২২:৩৪-৩৭ আয়াতে বলা হয়েছে, “পবিত্র পশু কোরবানি করো, তোমাদের জন্য এতে অনুকরণীয় শিক্ষা রয়েছে।” কিন্তু আকিকা সম্পর্কে কোরআনে সরাসরি উল্লেখ নেই, এটি সুন্নাত ও হাদিস ভিত্তিক বিধান।
হাদিসে, রাসূলুল্লাহ (সা.) আকিকার নিয়ম বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছিলেন, নবজাতকের জন্য দুই ছাগল বা দুটি ছাগলীর আকিকা দাও; ছেলে হলে দুইটি, মেয়ে হলে একটি (সহীহ বুখারি)। এছাড়া, আকিকা সাধারণত নবজাতকের সাতম দিনে সম্পন্ন হয়। অন্যদিকে, কোরবানী ঈদুল আযহার দিনে নির্দিষ্ট পশু দিয়ে হয়, যেমন গরু, ভেড়া বা উট।
ফিকহী শরিয়তে কোরবানী ও আকিকার পশু আলাদা বলে গণ্য করা হয়। কোরবানীর পশু অবশ্যই পূর্ণবয়স্ক এবং নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হতে হবে। আকিকার পশু সাধারণত ছোট এবং কম বয়সী হতে পারে। তদুপরি, কোরবানী পশু কোরবানীর উদ্দেশ্যে আলাদা নিবেদিত এবং এর মাংস দান-সদকায় বিতরণ করা হয়। আকিকা পশুর মাংসও ভাগ করে খাওয়া হয়।
একই গরুতে কোরবানি ও আকিকা দেয়া যাবে কিনা, এ বিষয়ে ইসলামী জ্ঞানীদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও প্রধানত তারা আলাদা আলাদা পশু দেওয়া উত্তম ও যথাযথ বলে মনে করেন। কারণ কোরবানী এবং আকিকা আলাদা ইবাদত ও উদ্দেশ্য। একই পশু দিয়ে দুটো ইবাদত সম্পন্ন করা শরিয়তে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি আলাদা আলাদা দান ও উদ্দেশ্যের জন্য নিবেদিত।
সার্বিকভাবে বলা যায়, ইসলামের মূল উৎস কোরআন ও সুন্নাহ অনুসারে কোরবানী এবং আকিকা আলাদা আলাদা পশু দিয়ে করার বিধান রয়েছে। একই গরুতে দুটো করা ফজিলতহীন এবং শরিয়তে সুন্নত ও বিধির পরিপন্থী।
আপনি যদি ধর্মীয় গুরুত্বের সঙ্গে সঠিকতা চান, তবে আলাদা পশু দিয়ে কোরবানী ও আকিকা সম্পন্ন করা উত্তম এবং এটাই ইসলামের ঐতিহ্য ও শালিসিক বিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন।
thebgbd.com/NA
