ঢাকা | বঙ্গাব্দ

গ্রিনল্যান্ড যাবেন ম্যাক্রোঁ

ম্যাক্রোঁ এই অঞ্চলের প্রধানমন্ত্রী জেনস-ফ্রেডেরিক নিলসেন এবং ডেনিশ নেতা মেটে ফ্রেডেরিকসেনের আমন্ত্রণে ভ্রমণ করছেন।
  • অনলাইন ডেস্ক | ১৪ জুন, ২০২৫
গ্রিনল্যান্ড যাবেন ম্যাক্রোঁ ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেনমার্কের স্বশাসিত অঞ্চল দখল করতে চান বলে ঘোষণা করার পর, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রোববার গ্রিনল্যান্ড সফরের পরিকল্পনা করছেন। ট্রাম্পের দখলের এই হুমকির পর এটি কোনো বিদেশি নেতার প্রথম সফর। গ্রিনল্যান্ডে মার্কিন উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে গ্রিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের সঙ্গে সংহতির প্রকাশ হিসেবে তার এই সফরকে দেখা হচ্ছে। প্যারিস থেকে এএফপি জানায় ম্যাক্রোঁ কয়েকদিন আগে বলেন, ‘আমরা এখানে আছি এবং যাতে কোনও লুণ্ঠন না হয় সেই লক্ষ্যে পুনঃবিনিয়োগ করতে প্রস্তুত আছি।


ট্রাম্প বারবার বলেছেন, নিরাপত্তার কারণে কৌশলগতস্থানে অবস্থিত, সম্পদ সমৃদ্ধ আর্কটিক দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন এবং এটি সুরক্ষিত করার জন্য শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। গ্রিনল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ দীর্ঘমেয়াদে স্বাধীনতার পক্ষে এবং ডেনিশ ও গ্রিনল্যান্ড উভয় নেতাই জোর দিয়ে বলেছেন, স্বায়ত্তশাসিত ভূখণ্ডটির নিজস্ব ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে হবে। তারা বারবার বলেছেন ওয়াশিংটন ‘কখনও গ্রিনল্যান্ড পাবে না।’


সোমবার জাতিসংঘের মহাসাগর শীর্ষ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ মন্তব্য করেন, গ্রিনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকা এবং আন্তর্জাতিক জলসীমার মতো অঞ্চল ‘বিক্রয়ের জন্য নয়’। তার এ মন্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের অব্যাহত আগ্রহের সরাসরি প্রতিক্রিয়া বলে মনে করা হয়। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স মার্চ মাসে গ্রিনল্যান্ড সফর করেন।


তবে ম্যাক্রোঁ এই অঞ্চলের প্রধানমন্ত্রী জেনস-ফ্রেডেরিক নিলসেন এবং ডেনিশ নেতা মেটে ফ্রেডেরিকসেনের আমন্ত্রণে ভ্রমণ করছেন। তার কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি ‘গ্রিনল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি ইউরোপীয় সংহতি এবং সমর্থনের বার্তা বহন করবেন। 


ফরাসি প্রেসিডেন্ট আর্কটিক নিরাপত্তা এবং এর সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে এর উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য ‘ইউরোপীয় পদক্ষেপে’ কীভাবে এই অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করবেন। জানুয়ারিতে কোপেনহেগেন আর্কটিক অঞ্চলে তার সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ২ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপটির ৮০ শতাংশই বরফ, তার দল জানিয়েছে, সেখানে হিমবাহের উদ্বেগজনক গলন নিয়েও আলোচনা করবেন ম্যাক্রোঁ। 


জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, গত ছয় বছরের মধ্যে পাঁচ বছরে রেকর্ডে সবচেয়ে দ্রুত হিমবাহের পতন ঘটেছে। ডব্লিউএমও জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকার মহাদেশীয় বরফের চাদরের বাইরে, বিশ্বব্যাপী ২ লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি হিমবাহ প্রায় ৭ লাখ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এগুলো দ্রুত সঙ্কুচিত হচ্ছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে। ম্যাক্রোঁ তার সফরের অংশ হিসাবে একটি হিমবাহের উপর দিয়ে যাবেন, এই সময় গ্রিনল্যান্ড ও ডেনিশ উভয় প্রধানমন্ত্রীও থাকবেন।


এরপর তিনি ইইউ-এর অর্থায়নে নির্মিত একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন, পরে একটি ডেনিশ হেলিকপ্টার ক্যারিয়ারে করে উভয় নেতার সঙ্গে বৈঠকে যোগদান করতে যাবেন। গ্রিনল্যান্ড সফরের পর জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের লক্ষ্যে ম্যাক্রোঁ কানাডা যাবেন।


মার্চের শেষের দিকে পিটুফিক সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শনের সময়, ভ্যান্স ডেনমার্কের সমালোচনা করে বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডের জনগণের জন্য ভালো কাজ করেনি।’ তিনি  অভিযোগ করেন যে তারা এর নিরাপত্তার প্রতি অবহেলা করেছে। জরিপগুলো ইঙ্গিত দেয় দ্বীপের ৫৭ হাজার বাসিন্দার বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ডেনমার্ক থেকে স্বাধীন হতে চায় কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চায় না।


সূত্র: এএফপি


এসজেড