আইভরি কোস্টে আগামী অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বাদ পড়া প্রার্থীদের পুনর্বহালের দাবিতে শনিবার আইভরি কোস্টের অর্থনৈতিক রাজধানীতে হাজার হাজার বিরোধীদলী নেতা-কর্মী বিক্ষোভ করেছেন বলে জানা গেছে। আবিদজান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
আইভরি কোস্টের চারজন বিশিষ্ট বিরোধী ব্যক্তিকে চূড়ান্ত নির্বাচনী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে তারা আগামী অক্টোবরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে যারা বাদ পড়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, দেশটির প্রধান বিরোধী দল এবং শনিবারের বিক্ষোভের মূল চালিকাশক্তি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ আইভরি কোস্ট (পিডিসিআই) এর নেতা টিজানে থিয়াম।
নিবন্ধনের সময় আদালতের রায়ে থিয়ামের আইভরি জাতীয়তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের পর এপ্রিল মাসে তাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। পিডিসিআই কর্মীরা, দলের সবুজ এবং সাদা পোশাক পরে, বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (সিইআই) দিকে মিছিল করে।
নির্বাচন কমিশনের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় বিক্ষোভকারীরা থিয়ামের ডাকনাম ব্যবহার করে- ‘টিটিকে প্রেসিডেন্ট পদে চাই’ ‘সিইআই দুর্নীতিগ্রস্ত’ বা ‘দুর্নীতিগ্রস্ত আদালত’ বলে চিৎকার করে শ্লোগান দেয়। ৬৪ বছর বয়সী আগ্নেরো গ্নাগনে বলেছেন, ‘পরিস্থিতি পরিবর্তন করা দরকার’। তিনি অভিযোগ করেছেন আইভরি কোস্ট ‘স্বৈরাচারী পদ্ধতিতে’ পরিচালিত হচ্ছে। দলের আরেক সমর্থক, স্টিফেন ব্রু কুয়াকু, নির্বাচনী তালিকা থেকে থিয়ামের বাদ পড়াকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের কোনও সংঘর্ষ হয়নি এবং পুলিশ নির্বাচন কমিশন থেকে প্রায় ১০০ মিটার (১০৯ গজ) দূরে বিক্ষোভকারীদের থামিয়ে দেয়। মাত্র কয়েকজন প্রবীণ দলীয় ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন এবং একটি আবেদন প্রদান করেছেন।
থিয়াম তিন মাস আইভরি কোস্ট থেকে দূরে রয়েছেন এবং বিক্ষোভে যোগ দেননি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি কেবল আমার সম্পর্কে নয়, এটি আমাদের দেশে গণতন্ত্রকে জয় করার জন্য একটি আন্দোলন। আসুন আমরা সংগঠিত থাকি। শিগগিরই আবিদজানে আপনাদের সঙ্গে থাকব এবং আমরা এই লড়াই চালিয়ে যেতে পারব।’
সাবেক প্রেসিডেন্ট লরেন্ট জিবাগবো, তার সাবেক ডান হাত চার্লস ব্লে গৌড এবং নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী গুইলাম সোরোকে অতীতের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে বছরের পর বছর ধরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তাদের পুনর্বহাল করা হয়নি।
পিডিসিআই-এর নির্বাহী সচিব সিলভেস্ট্রে এম্মু বলেছেন, ‘আমরা এই বহিষ্কারগুলোকে আমাদের দেশ থেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতারণামূলক কৌশল বলে মনে করি’। ৮৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট আলাসানে ওয়াত্তারা ২০১১ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন। নির্বাচনী তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত আছে, কিন্তু তিনি চতুর্থ মেয়াদে প্রার্থী হবেন কিনা তা এখনও ঘোষণা করেননি।
সূত্র: এএফপি
এসজেড