ঢাকা | বঙ্গাব্দ

কন্যাসন্তান হওয়ায় মিষ্টির প্যাকেটে ইটের গুঁড়া দিলেন জামাই

কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে উপহার হিসেবে মিষ্টির পরিবর্তে প্যাকেটে মাটি ইটের গুঁড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামাই মোকছেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ জুন, ২০২৫
কন্যাসন্তান হওয়ায় মিষ্টির প্যাকেটে ইটের গুঁড়া দিলেন জামাই ছবি : সংগৃহীত।

কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে উপহার হিসেবে মিষ্টির পরিবর্তে প্যাকেটে মাটি ইটের গুঁড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামাই মোকছেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এমন এক নজির বিহীন ঘটনা ঘটেছে গত কুড়িগ্রামের রৌমারীতে। রোববার (১৫ জুন) সকালে এ ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে।

পরিবার ও স্থানীয় দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বড় ধনতোলা এলাকার সাহেব আলী ওরফে সব্দুল হকের ছেলে মোকছেদুল ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের কাজাইকাটা এলাকার আফতার আলীর মেয়ে আছমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাদের ঘরে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।

সন্তান জন্মের সংবাদ পেয়ে স্বামী মোকছেদুল ইসলাম গত বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় শ্বশুরবাড়িতে যান। এ সময় শাশুড়ির হাতে একটি মিষ্টির প্যাকেট ধরিয়ে দেন। পরে মিষ্টিমুখ করার জন্য শাশুড়ি প্যাকেট খুলে দেখতে পান সেখানে কোনো মিষ্টি নেই, আছে মাটি ও ইটের গুঁড়া।

এ বিষয়ে স্ত্রী আছমা আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী আমাকে নির্যাতন করতেন। মাঝেমধ্যে আমার পরিবারের কাছে টাকা চাইতেন। আমরা গরিব মানুষ, তাই টাকা দিতে পারিনি। এদিকে আমার গর্ভে সন্তান এসেছে, এ খবর জানার পর আরও বেশি নির্যাতন করতেন। আমার স্বামী আমাকে বলতেন, ছেলে হলে সুখ পাবে, আর মেয়ে হলে দুঃখ পাবে।

আছমা আরও বলেন, পরে আমার মেয়ে সন্তান জন্ম হয়। এ সংবাদ পেয়ে আমার স্বামী আমাদের বাড়িতে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে হাজির হন। বাড়ির লোকজন ও পাড়া প্রতিবেশীকে মিষ্টি দিতে গিয়ে প্যাকেট খুলতে গেলে মাটি ও ইটের গুঁড়া পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে কন্যাসন্তানের বাবা মোকছেদুল ইসলাম বলেন, আমার কন্যাসন্তান জন্ম হওয়ার কথা শুনে আনন্দে শ্বশুরবাড়িতে এক কেজি মিষ্টি ও মেয়ের জন্য কিছু পোশাক নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিষ্টির কার্টনে নাকি মাটি-ইটের গুঁড়া দেখছে। এগুলো সব সাজানো। আমার সুখের সংসারে যারা আগুন দিচ্ছে তাদেও বিচার আল্লাহ করবে।

তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রীকে আমি কখনো কোনো নির্যাতন করিনি। যারা আমার স্ত্রীকে দিয়ে এসব যারা করাচ্ছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে।

দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাঈদ বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এলাকার মানুষের কাছে আমি শুনেছি তবে খোঁজখবর নিয়ে জানা যাবে আসলে ঘটনাটি কী ঘটেছিল।


thebgbd.com/NA