রাশিয়া গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইরানের বুশেহর নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টে যদি কোনো আঘাত হানে, তাহলে তাতে ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনার মতো বিপর্যয় ঘটতে পারে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক শক্তি প্রতিষ্ঠান রোসাটমের প্রধান আলেক্সি লিখাচেভ সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘যদি বুশেহর নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের প্রথম শক্তি ইউনিটে আঘাত হানে, তাহলে তা চেরনোবিলের মতো একটি বিপর্যয় ঘটাবে।’
১৯৮৬ সালে ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক প্ল্যান্টের চতুর্থ রিঅ্যাক্টরের বিস্ফোরণের ফলে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপর্যয় ঘটে। সেই সময়ে, প্রিপিয়াত শহরের ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) এলাকায় বিস্ফোরণটি ব্যাপক ক্ষতি করে, যা এখনো আন্তর্জাতিক স্তরে পারমাণবিক দুর্ঘটনার দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত।
লিখাচেভ আরও বলেন, এমন আঘাত ‘সত্য-মিথ্যার সীমানার বাইরে’ হবে এবং রোসাটম বর্তমানে বুশেহর প্ল্যান্টের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, যার মধ্যে সেখানে কর্মরত রাশিয়ান বিশেষজ্ঞদের নিরাপত্তাও অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়া তিনি জানিয়েছেন যে, এখন পর্যন্ত ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টগুলোর কোনো শারীরিক ক্ষতি হয়নি এবং তেহরানের নিউক্লিয়ার স্থাপনায় হামলার পর কোনও রেডিয়েশন নির্গমন ঘটেনি।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যতটা জানা গেছে, হামলার পর যে প্ল্যান্টগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেমন নাতাঞ্জ, সেখানে আঘাতের শক্তি এতটা ছিল না যে ভূগর্ভস্থ কারখানাগুলোর কোনো ক্ষতি হতে পারে।’
রাশিয়ার ২৫০ জন বিশেষজ্ঞ বর্তমানে বুশেহর প্ল্যান্টে কর্মরত রয়েছে এবং লিখাচেভ জানান যে পরিস্থিতি যদি আরও জটিল হয়, তবে রাশিয়া দ্রুত তাদের সকল কর্মীকে ইরান থেকে আর্জেন্টিনায় কিংবা আর্মেনিয়ার মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েল গত শুক্রবার ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর, অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বেড়েছে। ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইসরায়েলি শহরগুলোতে হামলা করেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরানী হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশো মানুষ আহত হয়েছে, আর ইরান জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬৩৯ জন নিহত ও ১,৩০০ জন আহত হয়েছে।
তবে রাশিয়া এ সময়ও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে, বুশেহর প্ল্যান্টের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং রাশিয়ান কর্মীদের সুরক্ষা সম্পর্কে পুরোপুরি নজর রাখছে।
thebgbd.com/NIT
