ঢাকা | বঙ্গাব্দ

‘নেতানিয়াহুর খেলায়’ না পড়তে বিশ্ব শক্তিগুলোকে এরদোয়ানের অনুরোধ

ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) যুব ফোরামের এক ভাষণে এরদোয়ান বলেন, “আরো ধ্বংস, রক্তপাত ও বেসামরিক প্রাণহানির আগেই ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে হাত গুলি থেকে সরানো এখন জরুরি।”
  • অনলাইন ডেস্ক | ২১ জুন, ২০২৫
‘নেতানিয়াহুর খেলায়’ না পড়তে বিশ্ব শক্তিগুলোকে এরদোয়ানের অনুরোধ রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ান শুক্রবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের ভয়াবহতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্বশক্তিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান—তারা যেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ‘চাল’ বা ‘খেলায়’ পা না দেন এবং যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রভাব খাটান।


ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) যুব ফোরামের এক ভাষণে এরদোয়ান বলেন, “আরো ধ্বংস, রক্তপাত ও বেসামরিক প্রাণহানির আগেই ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে হাত গুলি থেকে সরানো এখন জরুরি।”


তিনি বলেন, গাজায় গণহত্যা এবং ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যেখান থেকে ফেরার পথ নেই বললেই চলে। “আজ ইসরায়েল তাদের হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ করছে, অথচ গাজায় তারা ৭০০টিরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে,” বলেন এরদোয়ান।


তিনি জানান, ইসরায়েলি হামলায় গাজার ১,০০০ চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন এবং শত শত জনকে আটক করা হয়েছে। “যারা গাজাকে বিশ্বের বৃহত্তম কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছে, তারাই আজ যুদ্ধাপরাধ নিয়ে কথা বলছে—এটা চরম নির্লজ্জতা ও ধৃষ্টতার উদাহরণ,” মন্তব্য করেন এরদোয়ান।


গাজাবাসীর সহ্যশক্তির প্রশংসা করে তিনি বলেন, “নির্যাতিতদের পাশে আমরা সবসময় ছিলাম, আছি এবং থাকব। ৬২২ দিন ধরে যারা ভূমি রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের সাহস ও আত্মত্যাগ অনন্য।”


তিনি বলেন, এই চলমান গণহত্যার জন্য প্রধানত দায়ী নেতানিয়াহু সরকার, এবং যারা চুপ করে আছে, তারাও এই অপরাধের সহযোগী। “জায়নিস্ট লবির ভয়ভীতি দেখানো সত্ত্বেও আমরা কখনো আমাদের অবস্থান থেকে সরে যাইনি,” বলেন তিনি।


এরদোয়ান বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, সিরিয়ার সংঘাত, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনা বা ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন—সব ক্ষেত্রেই তুরস্ক নির্যাতিতের পক্ষে থেকেছে।


“আমরা দেখি কে কী বলছে না, দেখি নির্যাতিতরা কী বলছে। আমাদের কণ্ঠে শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার কথা। আমরা বলি, ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন দীর্ঘজীবী হোক,’” তিনি বলেন।


ওআইসি যুব ফোরামের গুরুত্ব তুলে ধরে এরদোয়ান বলেন, ২০ বছর ধরে সংগঠনটি শিক্ষা, নাগরিক সমাজ, কূটনীতি, মানবাধিকারসহ নানা খাতে যেসব কাজ করেছে, তা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ‘গাজা ট্রাইব্যুনাল’-এর মতো উদ্যোগকে বিশ্ববাসীর সামনে ইসরায়েলের নির্মমতা তুলে ধরার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেন।


২০১৯ সাল থেকে ওআইসি যুব ফোরাম ২৬২টি কর্মসূচির মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি দেশের ৮১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ মিলিয়নের বেশি তরুণের কাছে পৌঁছেছে বলে জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট।


“আমাদের লক্ষ্য—উম্মাহর তরুণ প্রজন্মকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেওয়া,” বলেন তিনি।


thebgbd.com/NIT