দিল্লিতে বসবাসকারী পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার এক শ্রমজীবী দম্পতি ও তাদের শিশুসন্তানকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে গ্রেপ্তার করে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ—এমন অভিযোগে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডেইলি টেলিগ্রাফ এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৬ বছর বয়সী দানিশ শেখ, তাঁর স্ত্রী ২৪ বছরের সোনালী খাতুন এবং পাঁচ বছরের ছেলে সাবির—দিল্লির রোহিণীতে ভাড়া বাসায় পাঁচ বছর ধরে বসবাস করছিলেন। ১৮ জুন তাদের পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। সোনালীর চাচাতো বোন রোশনি বিবি জানান, পুলিশকে বীরভূমে তাদের স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণ দিলেও এক সপ্তাহ পর জানানো হয়, তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি পরিবারের লোকজনকে হুমকিও দেওয়া হয় যেন তারা আর কিছু না করে।
পরে সোনালী এক অপরিচিত ব্যক্তির ফোনে জানান, তারা এখন ঢাকার কাছে রয়েছেন এবং স্থানীয় এক ব্যক্তির দয়ায় বেঁচে আছেন। রোশনি জানান, একই সময়ে তাঁদের গ্রামের আরও তিনজনকেও একই কায়দায় তুলে নিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।
এর আগেও মহারাষ্ট্র থেকে সাতজন বাংলাভাষী শ্রমিককে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল। পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে তারা দেশে ফেরেন।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “শুধু বাংলায় কথা বললেই কাউকে বাংলাদেশি বলা সাংবিধানিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এটা নিঃসন্দেহে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।” তিনি জানান, বিষয়টি আদালতে তোলা হবে।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, “বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি বানিয়ে পরিবারছাড়া করা হচ্ছে। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”
thebgbd.com/NIT