টানা ভারি বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৩০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, পরশুরামের মুহুরী নদীতে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ১০টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ১৩.৯২ মিটার, যা বিপৎসীমার (১২.৫৫ মিটার) চেয়ে ১.৩৭ মিটার ওপরে।
বাঁধ ভাঙনের তথ্য অনুযায়ী, পরশুরামে মুহুরী নদীর জঙ্গলঘোনা, অলকা ও শালধর এলাকায় ছয়টি, ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি, সিলোনিয়া নদীর গদানগর ও দেড়পড়া এলাকায় তিনটি এবং কহুয়া নদীর সাতকুচিয়া, বেড়াবাড়িয়া ও দৌলতপুর এলাকায় পাঁচটি স্থানে ভাঙন হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলগাজী ও পরশুরামে ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফুলগাজী ইউএনও ফাহরিয়া ইসলাম জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে শতাধিক মানুষ অবস্থান করছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ফেনী শহর ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। ফেনী বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে, অনেক এলাকায় বৈদ্যুতিক মিটার ও সাবস্টেশন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে আরও এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
পরশুরামের ইউএনও আরিফুর রহমান বলেন, ‘নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এখনও অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি, তবে আমরা মাঠ পর্যায়ে থেকে পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি।’
thebgbd.com/NA