ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ফেনীতে নদীর পানি কমলেও ভোগান্তি বেড়েছে, বিদ্যুৎ-নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন চার উপজেলায়

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১১ জুলাই, ২০২৫
ফেনীতে নদীর পানি কমলেও ভোগান্তি বেড়েছে, বিদ্যুৎ-নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন চার উপজেলায় ফাইল ছবি

ফেনীতে বৃষ্টি ও নদীর পানি কমতে শুরু করলেও বন্যা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। পরশুরাম ও ফুলগাজীতে পানি কিছুটা কমলেও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ফেনী সদর ও ছাগলনাইয়া উপজেলার শতাধিক গ্রাম। এতে চার উপজেলায় কয়েক লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। দুর্গত এলাকাগুলোর অনেক জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, টানা বর্ষণে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার অন্তত ২১টি স্থানে পানির প্রবাহ শুরু হয়। বুধবার থেকে বৃষ্টি কমলেও নিচু এলাকার পানি ফুলগাজী হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন এলাকায়।


ফেনী-ফুলগাজী এবং ফেনী-ছাগলনাইয়া সড়কের ওপর এখনো ১ থেকে ২ ফুট পানির প্রবাহ রয়েছে।


দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে ফুলগাজীর দৌলতপুর এলাকার বৃদ্ধা রেজিয়া বেগম বলেন, “গেল বছরের মতো এবারও পানি ডুবিয়েছে। জিনিসপত্র ভেসে গেছে। প্রতিবছরই বাঁধ ভাঙে, যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।”


উত্তর শ্রীপুরের বাসিন্দা আলী আজ্জম বলেন, “বাঁধের ভাঙা জায়গা দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে। বিদ্যুৎ, নেটওয়ার্ক—সবই বন্ধ। কারও পরিবর্তনে আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না।”


পুষ্পিতা রানি নামে এক বাসিন্দা বলেন, “ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। বয়স্ক আর শিশুদের নিয়ে চরম কষ্টে আছি। নিরাপদ পানিরও তীব্র সংকট চলছে।”


আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮.৫ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং বৃষ্টিপাতের হার কমছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন মজুমদার জানিয়েছেন, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং নতুন করে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা নেই।


জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, চার উপজেলার মধ্যে পরশুরামে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরে নতুন করে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৭ হাজার মানুষ অবস্থান করছে এবং ২০ হাজারের বেশি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।


https://thebgbd.com/BYB