ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মামলার হুমকি

শেয়ার বাজেয়াপ্ত করে বিক্রির বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা চলমান।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ জুলাই, ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মামলার হুমকি ছবি : সংগৃহীত।

২০০৮ সালের একটি চুক্তি লঙ্ঘন এবং বিনিয়োগ সুরক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার হুমকি দিয়েছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইসিবি ফিনান্সিয়াল গ্রুপ হোল্ডিংস এজি।


আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেডের (সাবেক ওরিয়েন্টাল ব্যাংক লিমিটেড–ওবিএল) প্রধান শেয়ারহোল্ডার এই গ্রুপটি। ৭ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে আইসিবি অভিযোগ করেছে, ২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত ‘শেয়ার বিক্রয় ও ক্রয় চুক্তি’র বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত বাংলাদেশ ব্যাংক পূরণ করেনি।


চিঠিতে বলা হয়, ওবিএল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে আইসিবি গ্রুপকে নিশ্চিত করা হয়েছিল যে, তারা যে শেয়ার কিনছে, তা আইনি জটিলতা ও দাবি থেকে মুক্ত। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে গ্রুপটি ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। কিন্তু পরবর্তীতে ওবিএলের সাবেক শেয়ারহোল্ডারদের দায়ের করা একাধিক মামলার কারণে মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।


চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, শেয়ার বাজেয়াপ্ত করে বিক্রির বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা চলমান। ২০১৪ সালের একটি মামলায় হাইকোর্ট শেয়ার হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার ফলে ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।


গ্রুপের দাবি, বাংলাদেশ ব্যাংক মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়নি। উপরন্তু, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পরিচালনা পর্ষদের প্রস্তাবিত সিইও নিয়োগও অনুমোদন দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্ষদ ভেঙে দিয়ে একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে দৈনন্দিন কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।


চিঠিতে বলা হয়েছে, এ ধরনের অনিশ্চিত পরিবেশে নতুন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা কঠিন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা সম্ভাব্য কৌশলগত অংশীদারদেরও নিরুৎসাহিত করছে।


সবশেষে গ্রুপটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তারা চুক্তিকে বাতিল ঘোষণা করবে এবং বিনিয়োগ ফেরতের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দাবি করবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হবে বলেও জানায় তারা।


চিঠির অনুলিপি সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের কাছেও পাঠানো হয়েছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরইফ হোসেন খান বলেন, “বিরোধ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি এবং সম্প্রতি এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।” তবে আইসিবির পাঠানো চিঠি সম্পর্কে তিনি অবগত নন বলেও জানান।


thebgbd.com/NA