ঢাকা | বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, এটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন: নাহিদ ইসলাম

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ জুলাই, ২০২৫
আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, এটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন: নাহিদ ইসলাম নাহিদ ইসলাম।

‘‘গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এতো হত্যাযজ্ঞের পরও ৫ অগাস্টের পর অনেকে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত— আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় আর, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।


তিনি বলেন, ‘‘আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাবো। জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায় প্রতিটি গ্রামে কর্মসূচি করবো। গোপালগঞ্জের প্রতিটি ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থিদের হবে।’’


আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার পর ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।


ফেসবুক পোস্টে নাহিদ বলেন, ‘‘শহীদ বাবু মোল্লার গোপালগঞ্জ, শহীদ রথীন বিশ্বাসের গোপালগঞ্জকে আমরা পুনরুদ্ধার করবো। মকসুদপুরে কোটালীপাড়ায় আমাদের শহীদদের কবর রয়েছে। এ মাটি মুজিববাদীদের হতে দিবো না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও মুজিববাদীদের হবে না, ইনশাআল্লাহ্। গোপালগঞ্জ নিয়ে আমাদের অবস্থান গতকালের বক্তব্যেই পরিষ্কার বলা হয়েছে। পুরো বাংলাদেশের প্রতি আমাদের যে কমিটমেন্ট গোপালগঞ্জের প্রতিও আমাদের সে কমিটমেন্ট। গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি রাজনৈতিক বৈষম্য আমরা বিরোধিতা করি। গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করবো।’’


এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবো। আমরা যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাইনি। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা চালায় আমাদের ওপর। যেরকমটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সবসময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এত হত্যাযজ্ঞের পরও ৫ অগাস্টের পর অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত- আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় আর, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন।’’


নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘৫ অগাস্টের পর আমরা বহুবার বলেছি আমরা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় জুলাই গণহত্যার বিচার চাই। কিন্তু ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ব্যাপকভাবে গ্রেফতার করা হয়নি। গ্রেফতার হলেও কোর্টে জামিন নিচ্ছে, থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে আছে ফ্যাসিবাদের দোসর এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, যাদের টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার নেতাকর্মীরা গতকাল গোপালগঞ্জে ছিল।’’


তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে, সকালের নাশকতার পরও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়েই আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছি। পদযাত্রা করি নাই, পথসভা করেছি শুধু। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের লোকজনকে আসতে দেওয়া হয় নাই। বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। যাওয়ার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তাবাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে আমরা সেভাবে সেখান থেকে বের হয়েছি।’’


অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা চারজনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডজ্ঞানকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশা করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতো তাহলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সারাদেশে এ গ্রেফতার অভিযান চালাতে হবে।’’


তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা কমিট করেছিলাম গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা গিয়েছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি যে মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দিবো না।’’


thebgbd.com/NIT