রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা নিয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও আইএসপিআরের প্রকাশিত তথ্যে বড় ধরনের গড়মিল দেখা দিয়েছে। ফলে দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র নিয়ে শুরু হয়েছে জনমনে বিভ্রান্তি ও প্রশ্ন।
বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুর ১১টা পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৯ জন। অথচ তার আগের দিন মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আইএসপিআরের দেওয়া তথ্যে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩১। অর্থাৎ, সরকারি সর্বশেষ ঘোষণায় দুইজন নিহত কম দেখানো হয়েছে।
এতে শুধু নিহত নয়, আহতের সংখ্যাতেও অমিল দেখা যাচ্ছে। মঙ্গলবার আইএসপিআরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন আহত হয়েছেন। কিন্তু বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে ৬৯ জন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতদের হাসপাতালে অবস্থানসংক্রান্ত তথ্যেও রয়েছে দ্বন্দ্ব। আইএসপিআর জানিয়েছিল, নিহতদের মধ্যে ১০ জন রয়েছেন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে, ১ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, ১৬ জন সিএমএইচে, ২ জন লুবনা জেনারেল হাসপাতালে, ১ জন উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে এবং ১ জন ইউনাইটেড হাসপাতালে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত বুধবারের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ১১ জন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে, ১ জন ঢাকা মেডিক্যালে, ১৫ জন সিএমএইচে, ১ জন লুবনায় এবং ১ জন ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা গেছেন। সেখানে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের কোনো নাম নেই।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, আইএসপিআর যে একজনের মৃত্যুর কথা বলেছিল উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে, তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকায় নেই। আবার সিএমএইচে একজন কম দেখিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, লুবনাতেও কম একজন, তবে বার্ন ইনস্টিটিউটে আইএসপিআরের তুলনায় একজন বেশি দেখানো হয়েছে।
সরকার বা আইএসপিআরের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এসব গড়মিলের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, দুর্ঘটনার ভয়াবহতা, হাসপাতালে রোগী স্থানান্তর, পরিচয় শনাক্তকরণ ও রিপোর্টিং সময়ের ব্যবধানের কারণে প্রাথমিক তথ্যে এমন অমিল হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এর আগে একই দিন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবও এক বিবৃতিতে জানান, মৃত্যুর সংখ্যা গোপন করার কোনো কারণ সরকারের নেই এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালুর মাধ্যমে প্রতিদিনের তথ্য হালনাগাদ করা হবে।
তবে সামগ্রিকভাবে ঘটনায় হতাহতদের নির্ভুল তালিকা দ্রুত প্রকাশ না হলে বিভ্রান্তি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
thebgbd.com/NIT