ঢাকা | বঙ্গাব্দ

উত্তরা সেক্টর-৪-এ শুটিং বন্ধে চিঠি, প্রতিবাদ জানালেন নির্মাতা-অভিনয়শিল্পীরা

উত্তরার সেক্টর-৪ আবাসিক এলাকায় শুটিং হাউসের কার্যক্রম বন্ধে হাউস মালিকদের উদ্দেশে চিঠি দিয়েছে সেক্টর-৪ কল্যাণ সমিতি।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জুলাই, ২০২৫
উত্তরা সেক্টর-৪-এ শুটিং বন্ধে চিঠি, প্রতিবাদ জানালেন নির্মাতা-অভিনয়শিল্পীরা ছবি : সংগৃহীত।

উত্তরার সেক্টর-৪ আবাসিক এলাকায় শুটিং হাউসের কার্যক্রম বন্ধে হাউস মালিকদের উদ্দেশে চিঠি দিয়েছে সেক্টর-৪ কল্যাণ সমিতি। গত ২০ জুলাই সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, শুটিংয়ের কারণে সড়কে জনসমাগম, যান চলাচলে বিঘ্ন এবং বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে।

চিঠিতে বলা হয়, আবাসিক এলাকায় এ ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বিদ্যমান নীতিমালার পরিপন্থী। সেক্টরের পরিবেশ ও সুনাম রক্ষায় হাউস মালিকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং বাড়ি শুটিং হাউস হিসেবে ভাড়া না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কল্যাণ সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী।

সেক্টর-৪ এলাকায় বর্তমানে লাবণী-৪, লাবণী-৫ ও আপনঘর-২ নামের তিনটি শুটিং হাউস রয়েছে। চিঠির প্রতিক্রিয়ায় লাবণী শুটিং হাউসের মালিক আসলাম হোসাইন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, “২৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি, কেউ কখনো অভিযোগ দেয়নি। এখন হঠাৎ করে আমাদের শুটিং বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে। বিষয়টি ডিরেক্টরস গিল্ডকে জানিয়েছি, আশা করি সবাই পাশে থাকবে।”

এ বিষয়ে ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, “শুটিং বন্ধে হঠাৎ একটি চিঠি দেওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। ধারাবাহিক নাটকের কন্টিনিউটি থাকে, প্রস্তুতি থাকে—এভাবে বন্ধ করা সম্ভব না। কমপক্ষে সময় বেঁধে দেওয়া উচিত ছিল। আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে আজই চিঠি দিচ্ছি। হাউস মালিকদের আশ্বস্ত করেছি, আমরা তাদের পাশে আছি।”

এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাট্যনির্মাতা, অভিনেতা ও বিনোদন অঙ্গনের অনেকে। নির্মাতা মাহমুদ দিদার মন্তব্য করেন, “উত্তরায় বহু বছর ধরে শুটিং হচ্ছে, কোনো অভিযোগ ছিল না। এখন হঠাৎ করে শুটিং হাউস বন্ধ বললে তা মানা যায় না। এ অঞ্চল থেকে শুটিং সংস্কৃতি হারিয়ে যাওয়ার আলামত দেখা যাচ্ছে।”

নির্মাতা তপু খান লেখেন, “শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে এমন সরাসরি নিষেধাজ্ঞা গ্রহণযোগ্য নয়। লাবণী ৪ আমাদের অনেকের স্মৃতিবিজড়িত একটি শুটিং হাউস। সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করছি।”

অভিনেতা রওনক হাসান বলেন, “আবাসিক এলাকায় শত শত স্কুল, অফিস, বিভিন্ন ব্যবসা চললেও শুধু শুটিং নিয়ে আপত্তি কেন? আগেও এ ধরনের সংকট হয়েছে, সেগুলো নীতিমালার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। এবারও আশা করি তেমনই হবে।”

নাট্যজগতের সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আশাবাদী হলেও, হঠাৎ করে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন।

thebgbd.com/NA