রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় কামচাটকা উপদ্বীপে প্রায় ৪৫০ বছর পর হঠাৎ করেই অগ্ন্যুৎপাত শুরু করেছে একটি নিষ্ক্রিয় আগ্নেয়গিরি। রোববার (৩ আগস্ট) দেশটির জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এই ঘটনা ঘটলো এমন এক সময়ে, যখন কিছুদিন আগেই ওই অঞ্চল কেঁপে উঠেছিল এক ভয়াবহ ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে, যা সুনামিরও জন্ম দেয়।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, কামচাটকার ক্রাশেনিনিকভ আগ্নেয়গিরি থেকে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছুটে যাচ্ছে আকাশে। আগ্নেয়গিরি বিষয়ক বিশ্বখ্যাত গবেষণা সংস্থা স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তথ্যমতে, শেষবার এই আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল ১৫৫০ সালে।
রুশ কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাইয়ের স্তম্ভ প্রায় ৬ হাজার মিটার (১৯ হাজার ৭০০ ফুট) উঁচু পর্যন্ত উঠেছে এবং এটি প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে পূর্বমুখী হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। তবে আশার কথা, ছাইয়ের এই বিস্তার জনবসতিপূর্ণ কোনো এলাকায় প্রভাব ফেলেনি।
কামচাটকার জরুরি মন্ত্রণালয় জানায়, আগ্নেয়গিরিটির জন্য ‘কমলা’ রঙের উড়োজাহাজ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ, ওই এলাকার আকাশপথে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এর আগে বুধবার একই অঞ্চলের সবচেয়ে উচ্চতর এবং সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ক্লুচেভস্কয়–তেও অগ্ন্যুৎপাত হয়। ক্লুচেভস্কয় ইউরোপ ও এশিয়ার সর্বোচ্চ সক্রিয় আগ্নেয়গিরি হিসেবে পরিচিত এবং ২০০০ সালের পর থেকে এটি অন্তত ১৮ বার অগ্ন্যুৎপাত করেছে।
এই দুটি অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বেই বুধবার কামচাটকা উপকূলে আঘাত হানে একটি ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প—যা ২০১১ সালের জাপানের ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের পর অন্যতম শক্তিশালী। এতে রাশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর সেভেরো-কুরিলস্কে সুনামি আছড়ে পড়ে এবং একটি মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা পানিতে তলিয়ে যায়।
ভূমিকম্পের প্রভাবে জাপান, হাওয়াই, ইকুয়েডরসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলজুড়ে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। লাখ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ভূকম্পনবিদরা বলছেন, এ ধরনের টেকটোনিক গতিশীল অঞ্চলে একাধিক অগ্ন্যুৎপাত এবং ভূমিকম্প একসঙ্গে ঘটতে পারে এবং তা অস্বাভাবিক নয়। তবে পরিস্থিতি এখনো স্থিতিশীল নয়, তাই আরও আফটারশক বা অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।
রুশ জরুরি মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং দুর্গম এলাকায় জরুরি সহায়তা দল পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে।
thebgbd.com/NA