অস্ট্রেলিয়ার নিকটবর্তী ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ পাপুয়া নিউগিনিতে ভয়াবহ ভূমিধসে ২ হাজারের বেশি মানুষ জীবন্ত সমাধিস্থ হয়েছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির সরকার। জাতিসংঘকে এমন তথ্যই জানিয়েছে দেশটি। সোমবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে প্রবল ভূমিধসে ২ হাজারেরও বেশি লোক চাপা পড়েছে বলে পাপুয়া নিউ গিনি সোমবার জাতিসংঘকে অবহিত করেছে। মূলত একটি চিঠিতে দেশটি জাতিসংঘকে এই তথ্য জানায় এবং সেই চিঠির একটি অনুলিপি এএফপির হাতে এসেছে।
পাপুয়া নিউ গিনির জাতীয় দুর্যোগ কেন্দ্র রাজধানী পোর্ট মোরেসবিতে অবস্থিত জাতিসংঘের অফিসকে বলেছে, ‘ভূমিধসে ২ হাজারেরও বেশি লোক জীবিত সমাহিত হয়েছে এবং এই ভূমিধস বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করেছে।’
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পাপুয়া নিউ গিনির এঙ্গা প্রদেশে যে ভূমিধস হয়েছে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রদেশের ৬টিরও বেশি গ্রাম। তবে ‘কাওকালাম’ গ্রামটি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
রোববার রাতে প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে এবং উদ্ধার কাজে বিঘ্ন ঘটছে বলে সোমবার জানিয়েছে দেশটি।
পাপুয়া নিউগিনির জাতীয় দুর্যোগ কেন্দ্র দেশটির রাজধানী পোর্ট মোরেসবিতে অবস্থিত জাতিসংঘের অফিসকে বলেছে, ভূমিধসে ২ হাজারেরও বেশি লোক জীবিত সমাহিত হয়েছে।
যদিও এখন পর্যন্ত মাত্র ৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
দুর্ঘটনাস্থলের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়কটি ধসে যাওয়ায় উদ্ধার কাজ চালানো ও নিখোঁজদের খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এখনও পৌঁছেনি। এখন হেলিকপ্টারই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।
তবে এরই মধ্যে সোমবার সাহায্যের আবেদন ও কান্না শুনে এক দম্পতিকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ‘কাওকালাম’ গ্রামের বাসিন্দা নিঙ্গা রোলে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাতে সবাই ঘুমিয়েছিলেন, তাই দুর্যোগের সময় অধিকাংশ মানুষই বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি।
দুর্যোগ অফিস বলেছে, ভূমিধসের ফলে ভবন, খাবারের গাছের বাগানের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে এবং দেশের অর্থনৈতিক লাইফলাইনে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।
সোমবার সকালে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা এই চিঠিটি পেয়েছেন। সেখানে আরও বলা হয়েছে, পোরগেরা মাইনে যাওয়ার প্রধান মহাসড়কটি ‘সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ’।
এতে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল রয়ে গেছে। কারণ ল্যান্ডস্লিপটি ধীরে ধীরে স্থানান্তরিত হচ্ছে, আর এটি উদ্ধারকারী দল এবং বেঁচে থাকা বাসিন্দা উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক।’