ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে

বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
  • | ২৯ মে, ২০২৪
বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান

বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।


আজ বুধবার (২৯ মে) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘কলকারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনারোধ এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণে জাতীয় কমিটির’ ৩য় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

 

সালমান এফ রহমান জানান, আমাদের একটা আইন হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)। এ আইনে একটি অথরিটি (কর্তৃপক্ষ) করার কথা রয়েছে—বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি। যত দ্রুত সম্ভব এটা যাতে পূর্ত মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।


তিনি আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে তিন পর্যায়ে আমরা সারা দেশের কলকারখানা পরিদর্শন করেছি। প্রথম পাঁচ হাজারে ফল অনেক ভালো পেয়েছি। পরিদর্শনের পর কারেক্টিভ অ্যাকশন প্ল্যান করে তাদের জানানো হয়েছে যে এই এই ত্রুটি আছে, এগুলো ঠিক করতে হবে। সে অনুসারে তাদের সময় দেয়া হয়েছে।


আমরা দেখেছি, আমরা যেভাবে অনুরোধ করেছিলাম, অন্তত ৫০ শতাংশ সেটা বাস্তবায়ন করেছে। বাকিদের আরও সময় দেয়া হয়েছে, তারা সবাই কাজ করছেন। সবার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলে কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।’

 

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে আমরা যেভাবে দ্রুত পরিদর্শন করেছি, দ্বিতীয় পর্যায়েও সেটা চালু থাকবে। তৃতীয় পর্যায়ে সারা দেশে পাঁচ হাজার ভবন পরিদর্শনের কথা ছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সারা বাংলাদেশে পরিদর্শন না করে ষোলোটি জেলা যেখানে শ্রমঘন এলাকা বেশি, সেগুলো আমরা পরিদর্শন করব।


এখন থেকে নতুন কারখানাগুলো ও বাণিজ্যিকভবনের নকশা ও পরিকল্পনার যে অনুমোদন দেয়া হবে, বিশেষ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বাইরে যেগুলো আছে, সেগুলোর অনুমোদন দেয় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অধীন কমিটি। আজ সিদ্ধান্তি নিয়েছি, পেশাদার সংগঠন যেগুলো আছে, যেমন: ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকচার, ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার—এসব সংগঠন তাদের অথরাইজড করার মতো কারা আছেন, তাদের একটা তালিকা দেবে। যেমন: স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, প্লাম্বিং, এমইপি, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল—তাদের তালিকা দিয়ে দেবে।’

 

‘তালিকায় যাদের নাম আছে, ভবনের নকশায় তাদের সই আছে কি না; সেটা দেখবে কমিটি। অনেক সময় সই নকল হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রথম তাড়া থাকবে, তালিকাভুক্তদের সইয়ে প্ল্যানিং বা নকশা জমা দেয়া হয়েছে কি না, সেটা দেখা। সই সঠিক কি না; পেশাগত সংগঠনকে সাথে নিয়ে সেটার সত্যতা যাচাই করা হবে।


বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) একটা ওয়ানস্টপ সার্ভিসের উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে আমাদের প্ল্যানিং, ফায়ার সার্ভিসও থাকবে। গত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ঢাকা শহরের দুটো বাণিজ্যিক মার্কেট আমরা চিহ্নিত করেছিলাম, একটা গুলশানে শপিং কমপ্লেক্স, আরেকটা হচ্ছে মৌচাক।’

 

‘আমাদের সিদ্ধান্ত অনুসারে গুলশানেরটা ভেঙে ফেলা হয়েছে। আর মৌচাকের বেলায় হাইকোর্ট থেকে একটি স্টে অর্ডার এসেছে, তাতে বলা হয়েছে, ওটাকে না ভেঙে রেট্রোফিট (সবকিছু ঠিক রেখে সংস্কার) করার জন্য। আজ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রাজউক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন দেখবে যে এটা রেট্রোফিট করা যায় কি না। যদি করা সম্ভব হয়, তাহলে করা হবে। সম্ভব না হলে আবার আদালতে গিয়ে স্টে অর্ডার ভেকেট করার জন্য বলব।’


তিনি বলেন, ঢাকা শহরের অনেক ভবনের পার্কিংয়ের জায়গায় দোকানপাট ও অন্যান্য কাজ করা হচ্ছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে আমরা বলেছি যে পার্কিংয়ের জায়গা যাতে পার্কিংয়ের কাজে ব্যবহার হয়।

 

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর একটি ওয়ানস্টপ সার্ভিস করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছিল, যেসব সিদ্ধান্ত এক জায়গায় থেকে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘হ্যাঁ, সেটাই তো বললাম আমি। বিডা যে ওয়ানস্টপ সার্ভিস করছে, এরপর সবকিছু এই মাধ্যমেই হয়ে যাবে।

 

আগে ষোলো কিংবা সতেরোটি প্রতিষ্ঠান থেকে সিদ্ধান্ত আসত। এখন কি বিডা থেকেই সেটা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নাহ‌্‌, ষোলোটি প্রতিষ্ঠান থেকে যেটা নিতে হবে, সেটা আপনার নিতেই হবে। সেটা তো বিডা দিতে পারে না।


‘যে প্রতিষ্ঠানটি অনুমতি দিত, সেটার জন্য তো তার সেই সক্ষমতা আছে, কিন্তু সেটা তো বিডার নেই। বিডা সমন্বয় করবে। এতে এক জায়গায় থেকে অনুমতিটা পাওয়া যাবে। আপনি এক জায়গায় আবেদন করবেন, স্বয়ক্রিয়ভাবে সেটা সেই জায়গায় চলে যাবে। সেখানে অনুমোদন মিললে আপনার কাছেই চলে যাবে। আপনাকে চৌদ্দ জায়গায় দৌড়াতে হবে না।

 

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে অনেক জরাজীর্ণ ভবন আছে। মাঝে মাঝে আওয়াজ দেয়া হলেও এসব ভবন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না। এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘বাড়িঘরে ঝুঁকিটা অনেক কম। 


বাড়িঘরে যারা থাকেন, কেবল তারা ঝুঁকিতে থাকেন। কিন্তু বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে অনেক লোকজন যায়, যে কারণে ঝুঁকি বেশি। তবে পর্যায়ক্রমে সব দেখব। আর আমাদের কমিটির মূল নিরাপত্তা কলকারখানা ও বাণিজ্যিক ভবনের।