ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ঘোষণা করেছে যে তারা গাজা-মিসর সীমান্তে ‘ফিলাডেলফি করিডোর’ নামে পরিচিত রুটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সেখানে রকেট লঞ্চার এবং অন্তত ২০টি সুড়ঙ্গ পাওয়ার দাবি করেছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলের ঘোষণাটি এমন সময় এলো যখন মিশরের সঙ্গে উত্তেজনা আর তীব্র হয়েছে। খবর বিবিসির।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, তারা গাজা ও মিশর সীমান্তের মধ্যকার কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সের একজন মুখপাত্র বলেন, সেখানে তারা এমন বিশটির মতো সুড়ঙ্গ খুঁজে পেয়েছে, যা হামাস অস্ত্র চোরাচালানের কাজে ব্যবহার করত। যদিও মিশরীয় টেলিভিশনে একটি সোর্সকে উদ্ধৃত করে এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে ইসরায়েল গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে নিজেদের সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা বোঝানোর চেষ্টা করছে।
আইডিএফ মুখপাত্র রিয়ার এডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আইডিএফ সৈন্যরা মিশর ও রাফাহ সীমান্তে ফিলাডেলফি করিডোরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
এই করিডোরকে হামাসের ‘লাইফ লাইন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই পথে হামাস নিয়মিত গাজা উপত্যকায় অস্ত্র আনার কাজ করে।
আইডিএফ মুখপাত্র বলেন, সৈন্যরা ‘অনুসন্ধান করে দেখছে এবং ওই এলাকার সুড়ঙ্গগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত করার’ কাজ করছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী হ্যাগারি পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন যে সবগুলো টানেল মিশরের সঙ্গে গিয়ে যুক্ত হয়েছে কি না তা তিনি নিশ্চিত নন।
ফিলাডেলফি করিডোর একটি বাফার জোন বা নিরাপদ অঞ্চল, যা মাত্র একশ মিটার প্রশস্ত। আর মিশর সীমান্ত থেকে গাজার দিকে তের কিলোমিটারের মতো।
মিশর এর আগে বলেছে যে তারা আন্তঃসীমান্ত (উভয় সীমান্তের সঙ্গে সংযুক্ত) টানেলগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। এর ফলে এগুলোর মাধ্যমে অস্ত্র চোরাচালান অসম্ভব।
ওদিকে মিশরের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রকে উদ্ধৃত করে আল কাহেরা নিউজ বলেছে ‘রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধকে প্রলম্বিত করা এবং ফিলিস্তিনি শহর রাফাহতে অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য ইসরায়েল এসব অভিযোগ ব্যবহার করছে। ইসরায়েল বলছে গাজা যুদ্ধে জয়ী হতে তাদের রাফাহ জয়ের বিকল্প নেই।
তিন সপ্তাহ আগে ইসরায়েলি সেনারা হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে রাফাহ ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এর আগে চলতি সপ্তাহে রাফাহর কাছে সীমান্ত এলাকায় মিশর ও ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনায় এক মিশরীয় সৈন্যের মৃত্যু হয়েছে।
মিশর ফিলিস্তিনের একটি শক্তিশালী সমর্থক এবং গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান এবং বিপুল সংখ্যক বেসামরিক নাগরিককে হত্যার ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে। তবে ইসরায়েলের মতো মিশরও ২০০৬ সালে গাজায় হামাস ক্ষমতায় আসার পর থেকে সীমান্ত অবরোধ করে রেখেছে।
যদিও তারা হামাসের সঙ্গে যোগাযোগের চ্যানেল খোলা রেখেছে এবং ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির প্রস্তাব সংক্রান্ত আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে।