ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভরসা করে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ওপর। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের চেয়ে তার ওপরে বেশি ভরসা করা হয়। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলার ভোটে শুভেন্দুর মতামতকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন বলে দলের ভেতরে ছিল আলোচনা-সমালোচনা। পুরো ভারতে বিজেপির হতাশার দিনে বাংলাতে ভরাডুবি হয়েছে দলটির। এর ফলে বিজেপিতে শুভেন্দুর ভবিষ্যৎ ও তার নেতৃত্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিজেপি এই নির্বাচনে ভাল ফল করলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘মুখ’ হয়ে উঠতে পারতেন শুভেন্দু। কিন্তু ফলের যে আভাস, তাতে মুখরক্ষা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে বিরোধী দলনেতার!
মেদিনীপুর আসনে অগ্নিমিত্রা পাল এবং বর্ধমান-দুর্গাপুরে দিলীপ ঘোষ পিছিয়ে পড়ার কারণে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার শিকার হচ্ছেন শুভেন্দু। কারণ, শুভেন্দুর ইচ্ছাতেই দিলীপকে তার জেতা আসন থেকে সরিয়ে অন্য আসনে দেয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
একটা সময়ে দিলীপ বেঁকে বসবেন বলেও মনে করা হলেও নেতৃত্বের প্রতি ‘আনুগত্য’ দেখিয়ে ২০১৯ সালে আড়াই হাজারের কম ভোটে জেতা আসনেই প্রার্থী হন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুরে দিলীপ জিতেছেন প্রায় ৮৯ হাজার ভোটে। সেই সঙ্গে দিলীপের নেতৃত্বেই ১৮টি আসনে জয় পায় বিজেপি।
বিজেপিতে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, শুভেন্দু ‘গোঁ’ ধরে বসে না থাকলে মেদিনীপুরে পিছিয়ে পড়তে হতো না। রাজ্যের সবচেয়ে সফল সভাপতি দিলীপকেও অন্য আসনে গিয়ে পরাজয়ের মুখে পড়তে হতো না।
এ নিয়ে ইতোমধ্যেই সরব দিলীপের ঘনিষ্ঠ বিজেপির ‘আদি’ নেতা। তাদের দাবি, শুভেন্দুর জন্যই রাজনীতিতে এসেই জয় পাওয়া এবং অন্যদের জেতানো দিলীপদাকে হারানোর ছক করেই অন্য আসনে পাঠানো হয়।
ওই গোষ্ঠীর এক নেতা বলেন, ‘দিলীপদার জনপ্রিয়তাকে খাটো করে দেখা হয়েছে। সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভুল। আর শুভেন্দুর ওপরে এতটা ভরসা করাও ঠিক হয়নি।’
সূত্র: আনন্দবাজার