ঢাকা | বঙ্গাব্দ

‘দেশের সংবিধান বাঁচালেন কৃষক-শ্রমিকরা’

নয়াদিল্লিতে জয়রাম রমেশ, সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও সোনিয়া গান্ধীকে পাশে বসিয়ে রাহুল বললেন, জোট যেখানেই লড়েছে, সবাই এক হয়ে লড়েছে।
  • | ০৫ জুন, ২০২৪
‘দেশের সংবিধান বাঁচালেন কৃষক-শ্রমিকরা’ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী

জয় হয়ত আসেনি। হয়ত সরকার তারা গড়বেন না। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেস তথা 'ইনডিয়া' জোটের ফল যা এসেছে, তা কার্যত ঐতিহাসিক। যেভাবে ৪০০ আসন পার করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি করে আসছিল বিজেপি, তাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে এই বিরোধী জোট।  

সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের খুশি আর লুকাতে পারলেন না রাহুল গান্ধী। নয়াদিল্লিতে জয়রাম রমেশ, সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও সোনিয়া গান্ধীকে পাশে বসিয়ে রাহুল বললেন, জোট যেখানেই লড়েছে, সবাই এক হয়ে লড়েছে। কংগ্রেস স্বচ্ছতার সঙ্গে ভারতকে একটা নতুন দিক নির্দেশ করতে পেরেছে। যে নির্দেশ একইসঙ্গে গরিবদরদী ও উৎপাদনমুখী। আমাদের লড়াই ছিল সংবিধান বাঁচানোর। আমাদের লড়াই ছিল গরিবদের পাশে থাকার। আপনারা আদানির স্টকের অবস্থা দেখেছেন তো? এ কী অদ্ভুত অবস্থা! জনতা মোদিজির সঙ্গে সরাসরি আদানিজিকে সম্পর্কিত করে দিয়েছেন। মোদিজির হার মানেই স্টক মার্কেটে আদানিজির পতন। এ এক সরাসরি সম্পর্ক, দুর্নীতির সম্পর্ক। দেশ নরেন্দ্র মোদিকে সাফ বলে দিয়েছে, আমরা আপনাকে চাই না। এটাই এই নির্বাচনের মূল কথা।

উত্তরপ্রদেশে কার্যত বিজেপির সঙ্গে চোখে চোখ রেখে টক্কর দিয়েছে কংগ্রেস ও জোটসঙ্গী সমাজবাদী পার্টি। যে রামমন্দির নিয়ে এত হইচই, সেই রামমন্দিরের কেন্দ্র ফৈজাবাদে বিজেপির লাল্লু যাদবকে হারিয়ে দিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির অবধেশ প্রসাদ। রাহুল নিজে রায়বরেলি থেকে জিতেছেন। অমেঠিতে ধরাশায়ী স্মৃতি ইরানি। সুলতানপুরে হেরে গেছেন মানেকা গান্ধী। খোদ নরেন্দ্র মোদির জয়ের ব্যবধান উল্কার মতো কমেছে।

রাহুল গান্ধী বলেন, এই ভোটের ফল এটাই বলে, জনতা বলে দিয়েছে, আমরা মোদিজি ও অমিত শাহ যেভাবে দেশ চালাচ্ছেন, সেটা পছন্দ করি না, ওরা যেভাবে সংবিধানকে আক্রমণ করেছে, আমরা সেটা পছন্দ করি না। এটাই সবচেয়ে বড় বার্তা। সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। খুব গর্বিত। দেশের মানুষের জন্য আমার গর্বের সীমা নেই। যেভাবে তারা রুখেছেন বিজেপিকে ও রক্ষা করেছেন সংবিধানকে। এটাই বলতে চাই, সংবিধানকে বাঁচানোর কাজ আজ হিন্দুস্তানের গরিবরা করেছেন। দেশের কৃষকরা বাঁচিয়েছেন, দেশের শ্রমিকরা বাঁচিয়েছেন। আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া মানুষরাই এই সংবিধানকে বাঁচিয়েছেন। তারাই আজ জিতলেন। তাদেরই ধন্যবাদ জানাতে চাই। কংগ্রেস আপনাদের জন্য আছে। যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছি, তা আমরা রাখবই।

এখনই ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলতে রাজি হলেন না রাহুল। বললেন, যা বলার জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনা করেই করবেন। শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। ঠিক কীভাবে আমরা আগামীর পথে চলব, সেটা শরিকদের মত না নিয়ে বলা সম্ভব নয়। তাদের সঙ্গে আলোচনা করার আগেই একতরফা সেসব তো বলে দিতে পারি না।

ভারতের ১৮তম সাধারণ লোকসভা নির্বাচনের ৫৪৩টি আসনের চূড়ান্ত ও আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এতে দেখা যাচ্ছে, গত দুই বারের মতো এবারও ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সবচেয়ে বেশি ২৪০টি আসন পেয়েছে। তবে তারা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৯টি আসন পেয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস।