‘হাসপাতাল না কসাইখানা?’ দের আল-বালার আল-আকসা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে এমনটাই বলতে বাধ্য হয়েছেন এক চিকিৎসক। তার চারিদিকে পড়ে রক্তাক্ত দেহ। কোথাও হয়তো কেউ বেঁচে— এই আশায় খোঁজ চালাচ্ছেন প্রিয়জনেরা।
নুসেরাত ও দের আল-বালার শিবিরে ‘অভিযান’ চালিয়ে হামাসের হাতে থাকা চার ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্ত করতে ওই দুই স্থানে নিহত অন্তত ২১০। গুরুতর আহত চারশোরও বেশি। সরকারি হিসাব বলে, এখনও পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত সাড়ে ৩৬ হাজার মানুষ। নানা মহলের যদিও আশঙ্কা, হতাহতের সংখ্যা এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।
এরই মাঝে, জাতিসংঘের ‘ব্ল্যাকলিস্ট’-এর তালিকায় উঠল ইসরায়েলের নাম। মূলত শিশুদের হত্যা ও তাদের উপরে ‘অকল্পনীয়’ অত্যাচার চালানোর অভিযোগে ইসরায়েলকে কালো-তালিকাভূক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন। কিছু সূত্রের মতে, কিছুটা একই কারণে এই তালিকায় হামাসের নামও রয়েছে।
জাতিসংঘের এক প্রতিনিধি, গিলাদ এরদান জানিয়েছেন, যে দেশ, সেনা বা গোষ্ঠী শিশুদের হত্যা, গুরুতর জখম, যৌন নির্যাতন, অপহরণ করে বা তাদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা যেমন হাসপাতাল, স্কুল কিংবা কোনও মানবিক সহায়তা থেকে তাদের বঞ্চিত করে, তাদেরকেই এই কালো-তালিকাভুক্ত করা হয়। সশস্ত্র সংঘর্ষ-পীড়িত শিশুদের নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ভার্জিনিয়া গাম্বার একটি রিপোর্টে দাবি, গত আট মাসে গাজায় যে সাড়ে ৩৬ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১৩ হাজার শিশু রয়েছে। তিনি এ-ও বলেন, আগামী সপ্তাহে আরও একটি রিপোর্ট দেওয়া হবে নিরাপত্তা পরিষদে।
মানবাধিকার সংগঠানগুলি জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে। স্বাগত জানিয়েছেন প্যালেস্টাইনের কর্তৃপক্ষও। তবে তীব্র কটাক্ষ করেছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৈতিকতার নিরিখে ইসরায়েল সেনা বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ’।
মধ্য গাজার নুসেরাতে ও দের আল-বালায় একটি ‘অভিযান’ চালিয়ে হামাসের হাতে থাকা চার বন্দিকে ছাড়িয়ে আনার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। ‘ঐতিহাসিক’ এই ‘অভিযানে উদ্ধার হওয়া সকলেই ‘সুস্থ’ বলে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। এই খবরকে স্বাগত জানিয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-সহ অনেকে। পাশাপাশি জোর দিয়েছেন যুদ্ধবিরতির উপরে।
ঢাকা
| বঙ্গাব্দ
