ঢাকা | বঙ্গাব্দ

তীরে এসে তরী ডুবানো বাংলাদেশ

  • | ১১ জুন, ২০২৪
তীরে এসে তরী ডুবানো বাংলাদেশ ৪ রানে হারলো বাংলাদেশ।

২ বলে দরকার ৬ রান। কেশভ মহারাজের ফুলটসটা উড়িয়ে দিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু হলো না, দৌড়ে এসে বল তালুবন্দি করে উল্লাসে মেতে ওঠেন এইডেন মার্করাম। সেই সঙ্গে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়ের আশা! তীরে এসেও তরী ডুবিয়ে ৪ রানে হারলো বাংলাদেশ।



নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লো স্কোরিং ম্যাচ হবে তা আগেই জানা ছিল। এই ম্যাচেও ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৬ উইকেটে ১১৩ রানের বেশি করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে জয়ের পথে থাকলেও ২০ ওভারে ১০৯ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।



লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ৫০ রান তুলতেই নেই ৫ উইকেট। ৯.৫ ওভারে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। শুরুটা তানজিদ হাসানকে দিয়ে। রাবাদার বলে দুই বাউন্ডারির পর হুট করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন।


এলোমেলো ব্যাটিংয়ে রান তোলার চেষ্টায় থাকা লিটন কোনোভাবেই মেলাতে পারছিলেন না টাইমিং। পেসারদের বিপক্ষে ছিলেন নড়বড়ে। স্পিনার কেশভ মহারাজ আসতেই কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ড্রেসিংরুমে। 


৫ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারায় সাকিব আল হাসানকে। পেসার নরকিয়ের শর্ট বল উড়াতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড উইকেট। এক ওভার শান্তও তার পথ অনুসরণ করেন। সাকিব করেন ৩, শান্তর ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান।


পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশ প্রতিরোধ পায় তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। ৪৪ রানের জুটি গড়েন তারা। মনে হচ্ছিল তাদের ব্যাটেই বাংলাদেশ সহজে পেরিয়ে যাবে লক্ষ্য। 


কিন্তু আম্পায়ারের এক সিদ্ধান্তে পুরো ম্যাচ ওলটপালট হয়ে গেল। শেষ ১৮ বলে বাংলাদেশের দরকার তখন ২০ রান। পেসার রাবাদা ১৮তম ওভার করতে এসে প্রথম বলেই পান উইকেটের স্বাদ। তার লেগ স্টাম্পের ওপরের বল তাওহীদের প্যাডে আঘাত করে। আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ আঙুল তুলে তাওহীদকে আউট দেন। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন তাওহীদ।



রিপ্লেতে দেখা যায় বল বেলসের চুমু খেয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। তৃতীয় আম্পায়ার রিপ্লে দেখে আম্পায়ারের অনফিল্ড সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত ঘোষণা করে। সেখানে থেমে যায় তাওহীদের ৩৪ বলে ৩৭ রানের ইনিংস। সেখানেই বাংলাদেশের আশার সমাপ্তি।



এর আগে  নতুন বলে পেসার তানজিম ছিলেন দুর্দান্ত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৫ রান তুলতে ৪ উইকেট হারায়। ৩টিই পেয়েছেন তানজিম। রেজা হেনড্রিকসকে এলবিডব্লিউ করার পর ডি কককে বোল্ড করেন। পরে স্টাবসকে সাকিবের হাতে তালুবন্দি করান কাভারে।



কেবল উইকেটই নন, বল হাতে সারাশি আক্রমণে তানজিম নাড়িয়ে দেন প্রোটিয়া শিবির। তাকে সঙ্গ দেওয়া তাসকিন পেয়ে যান প্রোটিয়া অধিনাক আইডেন মার্করামের উইকেট। তার ভেতরে ঢোকানো বল সহজাত ড্রাইভে খেলতে চেয়েছিলেন মার্করাম। কিন্তু বলের লাইনে ব্যাট চালাতে পারেননি মার্করাম। 


সেখান থেকে ক্লাসেন ও মিলার মিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান তোলেন। ৭৯ বলে ৭৯ রান আসে তাদের জুটি থেকে। তাসকিন নিজের শেষ ওভার করতে এসে ভাঙেন এই জুটি।


ফিফটি ছোঁয়ার অপেক্ষায় থাকা ক্লাসেন তাসকিনের বল উড়াতে গিয়ে বোল্ড হন ৪৬ রানে। ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় সাজান তার ইনিংস। মিলার ৩৮ বলে করেন ২৯ রান। শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে হাল ধরতে পারেননি কেউ। বাংলাদেশের বোলারদের চাপে স্রেফ এলোমেলো হয়ে যায় তাদের ব্যাটিং। 



এই গ্রুপ থেকে ৩ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা চলে গেল সুপার এইটে। ২ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ ১টিতে জিতেছে, ১টিতে হেরেছে। বাংলাদেশের আশা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। শেষ ২ ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও নেপালের সঙ্গে জিতলে সহজেই বাংলাদেশ খুঁজে পাবে সুপার এইটের দরজা।