আবগারি দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার তাকে জামিন দিলেন দিল্লির রউস এভিনিউ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক ন্যায় বিন্দু। শুক্রবার তিহার জেল থেকে মুক্তি পাবেন তিনি। সেখানে জামিনের নির্দেশ পৌঁছনোর পর শুরু হবে প্রক্রিয়া। তার আগে জামিনের বন্ড হিসাবে কেজরিকে দিতে হবে এক লক্ষ টাকা। আদালতের রায়দানের পরেই কেজরির সরকারি বাসভবনের সামনে জড়ো হন আপ কর্মী-সমর্থকেরা। বাজি পোড়াতে শুরু করেন তারা।
কেজরির আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, আবগারি দুর্নীতি মামলায় আম আদমি পার্টি (আপ)-এর প্রধানের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ নেই ইডির হাতে। এই মামলায় যারা রাজসাক্ষী হয়েছেন, তাদের বয়ানের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মামলাটি। নিম্ন আদালতের এই রায়ের উপর ৪৮ ঘণ্টার জন্য স্থগিতাদেশ চায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। যদিও সেই আবেদন খারিজ করেন বিচারক। আপ বিধায়ক দিলীপ পাণ্ডে বলেন, ‘‘এটা সত্যের জয়। প্রথম দিন থেকে আমরা বলছি, গোটা মামলা ভুয়ো।’’
বৃহস্পতিবার আদালতে শুনানিতে কেজরির আইনজীবী বলেন, ‘‘যারা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন, তাদের বয়ানই নেওয়া হয়েছে। তারা কেউ সাধু নন। তারা শুধু দাগি নন, মনে হচ্ছে, আটকদের অনেককে জামিন এবং ক্ষমাপ্রদানের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। আর কেউ কেউ রয়েছেন, যাদের গ্রেফতারই করা হয়নি।’’ শুনানির পর রায় স্থগিত রাখেন রউস এভিনিউ আদালত। তার পরেই বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ জামিনের রায় দেন বিচারক।
ইডি আদালতে দাবি করে, তেলেঙ্গানার একটি দল দিল্লিতে আবগারি লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করেছে। তাদের ‘দক্ষিণের গোষ্ঠী’ বলে উল্লেখ করেছে তারা। সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন কেজরির আইনজীবী। তিনি আদালতে বলেন, ‘‘দক্ষিণের গোষ্ঠীর থেকে ১০০ কোটি টাকা এসেছে, এ রকম কোনও প্রমাণ নেই। এগুলো সব বয়ান। এর কোনও প্রমাণ নেই।’’
‘আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে’ গত ২১ মার্চ কেজরিকে গ্রেফতার করে ইডি। তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। এর ফলে তিনিই ভারতের ইতিহাসে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হয়েছেন। জেলে বসেই দিল্লির সরকার পরিচালনা করেছেন কেজরি। কিছু দিন আগে লোকসভা নির্বাচনের আবহে প্রচারের জন্য তাকে জামিন দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
২১ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন পান তিনি। জেলের বাইরে বেরিয়ে প্রচারও করেছেন আপের হয়ে। তার পর ২ জুন আদালতের নির্দেশ মেনে আবার তিহার জেলে ফিরে গেছেন। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে দেয়। এ বার তাকে জামিন দিল দিল্লির রউস এভিনিউ আদালত।
ইডির অভিযোগ, ২০২১-২২ সালে দিল্লির আবগারি নীতির খসড়া তৈরির সময় টাকা তছরুপ হয়েছে। পরে উপরাজ্যপাল সেই নীতি বাতিল করে দেন। ইডির অভিযোগ, মদ ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা নিয়ে তাদের নতুন নীতিতে সুবিধা পাইয়ে দেন কেজরিওয়াল। সেই টাকা গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে আপের প্রচারে খরচ করেন তিনি।
ঢাকা
| বঙ্গাব্দ
