আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি ও তৎকালীন ডিবি পুলিশের এডিপি গোলাম সাকলায়েনের একটি ছোট ভিডিও সারাদেশে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। ভিডিওটি ভাইরাল হতেই পুলিশ ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।
এরপর সাকলায়েনের বিরুদ্ধে একের পর শুরু হয় তদন্ত। চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সরকার তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে।
সে সময় প্রকাশিত ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, নীল ও কালো বেলুনে সুসজ্জিত একটি ঘর, যেখানে রোমান্সে মাতোয়ারা হয়ে আছেন পরীমণি ও গোলাম সাকলায়েন। দুজনের মধ্যে মনের রঙের ছড়াছড়ি। যেখানে সাকলাইনের হাত ধরে কেক কাটছেন পরীমণি। আর সাকলাইনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন পরীমণি।
একপর্যায়ে পরীমণি সাকলায়েনকে মুখে কেক তুলে দেন এবং সাকলায়েন পরীমণির মুখে কেক তুলে দেন। কেক খাইয়ে দেওয়া অবস্থায় পরীমণি সাকলাইনের ঠোঁটে চুমু দিতেও দেখা যায় পরীকে। ভিডিওর এক পর্যায়ে দেখা যায় কেক খাইয়ে দেওয়া অবস্থায় পরীমণি তার মুখে কেক নিয়ে সাকলাইনের মুখে ধরেন এবং দুজনে রোমাঞ্চকর ভাবে কেকের মধ্যে কামড় দেন।
ভিডিও শেষ পর্যায়ে পরীমণিকে হাত তুলে কোমর দুলিয়ে নাচতেও দেখা যায় যা উপভোগ করেন গোলাম সাকলায়েন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খালা-২ শাখা থেকে উপসচিব রোকেয়া পারভিন জুঁই স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করার জন্য দরখাস্ত করা হয়।
শৃঙ্খালা শাখার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাকলায়েন ধারাবাহিকভাবে নায়িকা পরীমণির বাসায় নিয়মিত রাত্রি যাপন করতে শুরু করেন। বিভিন্ন সময়ে (দিনে ও রাতে) নায়িকা পরীমণির বাসায় সাকলায়েন অবস্থান করেছেন বলে মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্ট দেখে প্রমাণ পাওয়া যায়।
রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, তার ও পরীমণির আদান-প্রদানকৃত মেসেজসমূহ (২৯ জুলাই, ২০২১ তারিখ হতে ৩ আগস্ট, ২০২১ তারিখ পর্যন্ত) সামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণির ফেসবুক আইডি ও গোলাম সাকলায়েন সিথিল নামে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথোপকথন এবং তাদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে (১১ জুলাই, ২০২১ তারিখ হতে ৪ আগস্ট, ২০২১ তারিখ পর্যন্ত) কথোপকথন সাধারণ পরিচিতি বা পেশাগত প্রয়োজনে স্থাপিত কোনো সম্পর্কের নয়। বরং অনৈতিক প্রেমের সম্পর্ক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ আগস্ট, ২০২১ তারিখ ভোর ৬টা থেকে ২ আগস্ট, ২০২১ তারিখ রাত ৩টা পর্যন্ত রাজারবাগ মধুমতি পুলিশ অফিসার্স কোয়ার্টার্সে নায়িকা পরীমণির যাতায়াতের ধারণকৃত সিসিটিভি ফুটেজের ফরেনসিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণেও প্রমাণ পাওয়া যায়।
সাকলায়েন বিবাহিত ও এক সন্তানের বাবা হওয়া সত্ত্বেও পরীমণির সঙ্গে তার বিবাহবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, পরীমণির সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন ও নিজের সরকারি বাসভবনে নিজ স্ত্রীর অবর্তমানে সময় কাটানোর মতো ঘটনা বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে তা প্রচারিত হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। উল্লিখিত অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।