ঢাকা | বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি উদ্যোক্তা হত্যায় মার্কিন সহকারী দোষী সাব্যস্ত

ফাহিমের আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো দেখতেন হাসপিল। তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র তখন জানায়, ফাহিমের মোটা অঙ্কের অর্থ (চার লাখ ডলার) সরিয়ে ফেলেন তিনি।
  • | ২৭ জুন, ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি উদ্যোক্তা হত্যায় মার্কিন সহকারী দোষী সাব্যস্ত টাইরেস হাসপিল (ইনসেটে ফাহিম)

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ উদ্যোক্তা এবং বাংলাদেশে পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার সাবেক সহকারী টাইরেস হাসপিল দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সোমবার ম্যানহাটান সুপ্রিম কোর্টের জুরিবোর্ড এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ফাহিম সালেহ রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা ছিলেন। নাইজেরিয়াভিত্তিক স্কুটার স্টার্টআপ গোকাদা প্ল্যাটফর্মের প্রধান নির্বাহী তিনি। নিউইয়র্কের নিজ অ্যাপার্টমেন্টে ২০২০ সালের ১৩ জুলাই খুন হন তিনি। ওই ঘটনায় তখন তার ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস হাসপিলকে গ্রেফতার করা হয়।

নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের একটি আদালতে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর হাসপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ ঘটনার বিচার শুরু হয়। সোমবার আদালতে টাইরেস হাসপিল দাবি করেছেন, তিনি তার প্রেমিকাকে আকৃষ্ট করতে নানা উপহার কেনার জন্য ফাহিমের অর্থ চুরি করেন। সেই ঘটনা লুকাতেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে বিচারক তার এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

টাইরেস হাসপিল (২৫) তার বস ফাহিম সালেহর ৪ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করেন। এই অর্থ চুরির ঘটনা লুকাতে ফাহিমকে হত্যার পর ইলেকট্রিক করাত দিয়ে দেহ টুকরা টুকরা করা হয়েছে। এ কারণে হাসপিলকে প্রথম-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

ফাহিমের আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো দেখতেন হাসপিল। তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র তখন জানায়, ফাহিমের মোটা অঙ্কের অর্থ (চার লাখ ডলার) সরিয়ে ফেলেন তিনি। বিষয়টি ধরা পড়ার পর ফাহিম ওই অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ দেন তাকে। হাসপিল ধাপে ধাপে অর্থ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আবার অর্থ চুরি করেন। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেন ফাহিম। এরপরই তিনি এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটান।

আইনজীবীরা বলেছেন, ফাহিমকে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনামাফিক খুন করেন হাসপিল। প্রথমে টেজার ব্যবহার করে ফাহিমকে অজ্ঞান করা হয়। টেজারের সূত্র ধরে হাসপিলকে শনাক্ত করার কথা জানায় পুলিশ। হত্যার পর ফাহিমের শরীর টুকরা টুকরা করার কাজে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক করাতসহ পরিচ্ছন্নতাসামগ্রী কেনার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়।

১০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় হাসপিলের সাজা ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছে। তার ২৫ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।