বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পশ্চিমবঙ্গকে বাদ রেখেই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি নবায়ণের পথে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার— মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা এই অভিযোগকে আগেই উড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। শুক্রবার (২৮ জুন) বিষয়টি নিয়ে আবারও মুখ খুললেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল, বলেছেন গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বক্তব্যের সত্যতা নেই।
তার কথায়, “যে দাবি করা হচ্ছে (মমতার অভিযোগ), তা বাস্তবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। যে অভ্যন্তরীণ কমিটি গড়া হয়েছে, তার সবকয়টি বৈঠকেই পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এমনকি ৬ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গঙ্গা চুক্তিতে ২০২৬-এর পরেও যেন রাজ্যের সুপেয় পানি এবং শিল্পের প্রয়োজনীয়তার কথা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখন এই কমিটি তার চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে জলসম্পদ মন্ত্রণালয়কে।” আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্রে জানানো হয়, ওই কমিটির শেষ বৈঠকেও (৩১ মে) পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির নবায়নের প্রসঙ্গটি আলোচিত হয়। ২০২৬ সালে ৩০ বছরের ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। চুক্তি নবায়ন বিবেচনার জন্য দুই দেশের মধ্যে কারিগরি একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের বৈঠকের পর এ সংক্রান্ত ঘোষণাও দেওয়া হয়। সম্প্রতি মমতা অভিযোগ করেন, গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করেনি।
কেন্দ্রীয় সূত্রের বক্তব্য, ২০১৩-র অগস্ট থেকে ২০২৪-এর মে মাসের মধ্যে ওই কমিটি এখনও পর্যম্ত চারটি বৈঠক করেছে। জলশক্তি মন্ত্রণালয়কে তারা চূড়ান্ত রিপোর্টটি পেশ করে ১৪ জুন। কেন্দ্রের দাবি, এই চারটি বৈঠকের তিনটিতে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব থেকেছে। কখনও সেচ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, কখনও চিফ ইঞ্জিনিয়ার উপস্থিত থেকেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, গঙ্গা চুক্তি নবায়নের বিষয়টির আন্তর্জাতিক পর্যালোচনা হবে। সে জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠিত হয়েছে। সেই কমিটির প্রতিটি বৈঠকে এই চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সবাই যোগ দিয়েছেন। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিও যোগ দিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও জানান, অভ্যন্তরীণ কমিটি তাদের প্রতিবেদন ইতিমধ্যেই পেশ করেছে। আপাতত সেই প্রতিবেদন বিবেচনাধীন।