ঢাকা | বঙ্গাব্দ

পিটিআইকে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে পাকিস্তান সরকার

ইমরানের দলের স্বীকৃতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলাকালীন সময়ে পাকিস্তান সরকারের এই ঘোষণা ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।
  • | ১৫ জুলাই, ২০২৪
পিটিআইকে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে পাকিস্তান সরকার ইমরান খান- শাহবাজ শরীফ

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভার সদস্য তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লা তারার। খবর ডনের।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে বিদেশি অনুদান পাওয়া, ৯ মে সহিংসতায় সরাসরি জড়িত থাকা, সাইবার (রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস) মামলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব তথ্যপ্রমাণ মিলেছে, আমরা বিশ্বাস করি, তা পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে যথেষ্ট।

ইমরানের দলের স্বীকৃতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলাকালীন সময়ে পাকিস্তান সরকারের এই ঘোষণা ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এই ঘটনার জেরে প্রায় দু’দশক পরে আবার পাকিস্তানে শাসক বনাম সুপ্রিম কোর্ট সংঘাতের আবহ তৈরি হতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার দেশটির শীর্ষ আদালত কার্যত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত খারিজ করে জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের পিটিআই দলগত ভাবেই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৩টি সংরক্ষিত আসন পাওয়ার যোগ্য।

ওই মামলায় নির্বাচন কমিশনে যুক্তি ছিল, আনুপাতিক ভোটের হার অনুযায়ী শুধুমাত্র স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিরই মহিলা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ৭০টি আসন প্রাপ্য। পিটিআইয়ের স্বীকৃতি বাতিল হওয়ায় তারা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পেতে পারে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের ১৩ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ শুক্রবার সরাসরি সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।

পাকিস্তানের শীর্ষ আদালতের শুক্রবারের ওই রায়ের পরেই প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছেন শাসক পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতাকর্মীরা। এর জেরে পাঞ্জাব, খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং সিন্ধু প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙচুর, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কয়েকটি স্থানে পিটিআইয়ের সঙ্গে শাসক জোটের সমর্থকদের সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গেছে। সংঘাতেই সেই আবহেই ইমরানের দলকে নিষিদ্ধ করার বার্তা দিলেন তথ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন স্বীকৃতি বাতিল করায় দলগত ভাবে ভোটে লড়তে না পারলেও ফেব্রুয়ারিতে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচনে ইমরানের অনুগামীরা সতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে লড়ে ৮৪টি আসনে জিতেন। পরে তারা সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে শপথ নিয়ে বিরোধী দলনেতার পদ পান।

অন্য দিকে, শাসক জোটের পিএমএলএন ১০৮ এবং পিপিপি ২১টিতে জিতে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দলীয় মর্যাদা ফিরে পেয়ে ২৩টি সংরক্ষিত আসনের দখল পেলে সংখ্যার হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দল পিএমএলএনের সঙ্গে ব্যবধান কমবে পিটিআইয়ের। শাসক জোটের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাও থাকবে না। সে কারণেই নিষেধাজ্ঞা জারির পদক্ষেপ বলে অভিযোগ।