পাশিচমবঙ্গে আলোচিত আরজি কর হাসপাতালে গণধর্ষণের পর নারী চিকিৎসককে হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল গোটা ভারত। ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে এবার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ঘটনার আগে মোট চারবার হাসপাতাল চত্বরে ঢুকেছিলেন আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। অভিযোগ উঠেছে, ঠান্ডা মাথায় ধর্ষণ-হত্যার পরেও আরেক নারীকে ফোন করে তার সঙ্গে অসভ্যতা করেন তিনি।
ঘটনার তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই মঙ্গলবার জানায়, ঘটনার আগের দিন সকাল থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত মোট চার বার আরজি করে যান অভিযুক্ত। তার মধ্যে একবার গেছেন আর এক সিভিক ভলান্টিয়ার বন্ধুর সঙ্গে! সেই বন্ধুর কোনও পরিচিত আরজি করে ভর্তি ছিলেন। তাকে দেখতে যাওয়ার ওছিলাতেই বন্ধুর সঙ্গে হাসপাতালে ঢোকেন তিনি। এ ছাড়াও চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং হত্যার আগে আরও দু’বার নানা অজুহাতে আরজি কর চত্বরে গেছেন অভিযুক্ত।
সিবিআই সূত্রে আরও জানায়, ঘটনার পর এক ‘দিদি’কে ফোন করেন অভিযুক্ত। ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করলেও তার সঙ্গেও নাকি ফোনে অভব্যতা করেন তিনি। ঘটনার আগের রাতের সিসিটিভি ফুটেজ বলছে ৮ অগস্ট রাত ৮টা নাগাদ একবার হাসপাতাল থেকে বেরোন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। যান চেতলার এক যৌনপল্লিতে। সেখান থেকে ফেরার পথে শম্ভুনাথ পণ্ডিত স্ট্রিটে আরও একটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেন তিনি!
৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চারতলায় সেমিনার হলে চিকিৎসকের রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সেদিন রাতেই সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে লালবাজারে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। আরজি কর-কাণ্ডে আটক হন পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। অতীতেও নারীদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করার ‘রেকর্ড’ রয়েছে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের। নিজের পাড়াতেও নারীদের উত্ত্যক্ত করা, চাঁদাবাজি ইত্যাদি নানা অভিযোগ রয়েছে তার নামে।
প্রসঙ্গত, আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সিবিআইকে তদন্তভার দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। মামলা সংক্রান্ত নথিপত্র হস্তান্তরিত হয়। বুধবার সকালে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি বিশেষ দল। মামলার নথিপত্রের পাশাপাশি ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকেও হেফাজতে নেয় তারা। ইতিমধ্যেই দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে অভিযুক্তকে। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করাতেও সক্রিয় হয়েছে সিবিআই।