ভারত থেকে নেপালে যাওয়া পূণ্যার্থীবাহী একটি বাস নদীতে পড়ে অন্তত ৪১ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় আরও ১৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে নেপালের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশ ভারতীয়। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী গিরিশ মহাজন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নেপালে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাসে ৪৩ জন যাত্রী ছিল। বাসটি উত্তরপ্রদেশ থেকে যাত্রী নিয়ে নেপালে যায়। বাসটি নেপালের পোখরা থেকে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে রাজধানী কাঠমাণ্ডু যাচ্ছিল। সেসময় এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ি রাস্তা থেকে গড়িয়ে তানাহুন জেলার মারস্যাংদি নদীতে পড়ে যায়। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
স্থানীয় বাসিন্দারা নদীতে বাসটি পড়ে থাকতে দেখে কর্তৃপক্ষকে খবর দেন এবং নিজেরাই উদ্ধারের চেষ্টা করেন। পরে বাসটি থেকে একে একে ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দুর্ঘটনাস্থল থেকে পূণ্যার্থীদের উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে করে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনায় হতাহতদের বেশির ভাগই ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বাসটি একটি পাহাড়ি ঢালের নিচে খরস্রোতা নদীর ধারে পড়ে আছে। উদ্ধার কর্মীরা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে বেঁচে থাকা যাত্রীদের খুঁজছেন। নেপালের সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ও একটি চিকিৎসক দল দুর্ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে।
তানাহুন জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা দীপকুমার রায়ার উদ্ধৃতি দিয়ে এএনআই বার্তা সংস্থা বলেছে, বাসটির নাম্বারপ্লেটে লেখা ইউপি এফটি ৭৬২৩। গাড়িটি নিবন্ধন করা আছে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তর প্রদেশে। শুক্রবার সকালে বাসটি ভারত থেকে নেপালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। নিহতদের মধ্যে ৬ বছরের একটি মেয়ে শিশুও রয়েছে।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ বলেছেন, বাসের দুর্ঘটনাকবলিত যাত্রীদের বেশির ভাগই এই রাজ্যের বাসিন্দা। মন্ত্রী গিরিশ মহাজন জানান, বাসটিতে ঠিক কতজন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা ছিলেন তার সঠিক পরিসংখ্যান এখনও তাদের হাতে আসেনি। রাজ্য সরকার দিল্লি, নেপালের প্রশাসন ও ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে মরদেহ ভারতে ফিরিয়ে আনা হবে। পরে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
নেপালে পোখারা থেকে কাঠমান্ডু যাওয়ার বাস রুট ভারতীয় পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। সড়ক ও যানবাহন রক্ষণাবেক্ষণের দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং পার্বত্যাঞ্চলে সরু রাস্তার কারণে নেপালে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। জুলাইয়ে ভূমিধসে দুটি যাত্রীবাহী বাস ত্রিশূলী নদীতে পড়ে কয়েক ডজন যাত্রী নিখোঁজ হন।