ফ্রান্সে টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরভকে প্যারিসের একটি আদালতে হাজির করা হয়েছে। দুরভকে ২৪ আগস্ট প্যারিসের বাইরে ল্য বুরজেট বিমানবন্দরে আটক করা হয়। আটকের পর তার প্রাক-বিচার আটকাদেশের মেয়াদ শেষ হলেও তা পরের দিন ৯৬ ঘণ্টা বাড়ানো হয়। প্যারিসের প্রসিকিউটরের অফিসের মতে, দুরভকে মাদক পাচার এবং টেলিগ্রামের মাধ্যমে শিশুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত প্রতারণায় সহযোগিতাকারী সন্দেহে তদন্ত করা হচ্ছে। খবর তাস ও এএফপির।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, গ্রেফতারের পর ফ্রান্সের পক্ষ থেকে দুরভের বিপক্ষে অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। অর্থাৎ, জটিলতা তৈরির মাধ্যমে শিশু পর্নোগ্রাফি, অবৈধ লেনদেন, মাদকের প্রচারণা, জালিয়াতিতে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন অপরাধ বিস্তারের ক্ষেত্র তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। এই অভিযোগে অন্তত ৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে দুরভের।
ফ্রান্সে রুশ দূতাবাস জানিয়েছে, কূটনীতিকরা দুরভের অধিকার সুরক্ষার দাবি করেছেন এবং তাকে কনস্যুলার সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেছেন। তবে, ফরাসি কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে বলে দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
দুরভের গ্রেপ্তারের ঘটনায়, মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক দুরভকে গ্রেফতার নিয়ে ফ্রেঞ্চ সরকারের প্রতি বিদ্রুপ করেছেন। একইসঙ্গে এমন পদক্ষেপ অন্যসব আইডিয়াকে সেন্সর করার উপায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
টেলিগ্রাম নিয়ে ইউরোপের সাবিক দৃশ্যপট ভিন্ন। বেলজিয়ামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গুই ভেরহফস্টাডট বলেন, বৈশ্বিক সাইবার অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু এই টেলিগ্রাম। বাক স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতাও জড়িত। কিছুদিন আগে অবশ্য স্পেন হাইকোর্ট টেলিগ্রাম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। কেননা দেশটির মতে, দেশভিত্তিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিষয়টি নিয়ে ইউরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
টেলিগ্রামের দাবি করেছে, ইউরোপে প্ল্যাটফর্মটির ৪১ মিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৪৫ মিলিয়ন ব্যবহারকারী থাকা অ্যাপগুলোকে ডিজিটাল সার্ভিসেস এক্ট রেগুলেশন অনুযায়ী ‘বড় অনলাইন প্লাটফর্ম’ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। এক্ষেত্রে টেলিগ্রাম বেশ কৌশলে আইনি ও তথ্যগত জটিলতা এড়িয়ে যেতে পারছে।