এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন ভিনিসিউস জুনিয়র। এবারের ব্যালন ডি'অর জয়ের সম্ভাবনায় সবচেয়ে এগিয়ে তিনিই। রিয়াল মাদ্রিদকে একের পর এক সাফল্য এনে দেয়া এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার মাঠ ও মাঠের বাইরে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ করছেন। তার এই যুদ্ধ অনেকের কাছে তাকে নায়কে পরিণত করলেও অনেক সমালোচনাও সহ্য করতে হচ্ছে তাকে। বিশেষ করে মাঠে তার আগ্রাসী উদযাপন ও আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই।
ইউরোপে রাজত্ব করে চলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই মুহূর্তে রিয়াল মাদ্রিদের এই রাজত্বের নেতৃত্বে ভিনিসিউস জুনিয়রই। তিন মৌসুমেই চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন তিনি। গত মৌসুমে রিয়াল রিয়ালকে লা লিগা এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাও এনে দিয়েছেন তিনি। খেলোয়াড়ি নৈপুণ্যের জন্য তার প্রতি মুগ্ধতা না জন্মানোর কোনো কারণই নেই।
তবে আচরণের জন্যই অনেকেই অপছন্দ করেন ভিনিকে। বিশেষ করে ভ্যালেন্সিয়া সমর্থকদের কাছে তিনি চক্ষুশূল। ভ্যালেন্সিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিস্কো পাকো রোইগ তো ভিনিসিউসকে খেলোয়াড় হিসেবে দারুণ মনে করলেও ব্যক্তি হিসেবে তাকে 'ফালতু' বলে মন্তব্য করেছেন।
১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ভ্যালেন্সিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন পাকো রোইগ। তিনি ভিনিসিউসের বর্ণবাদ বিরোধী অবস্থানের সমালোচনা করছেন, একই সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদে নন-স্প্যানিশ খেলোয়াড়ের আধিক্যের কারণে ক্লাবের নাম বদলে রিয়াল ইমিগ্র্যান্টস রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
এই ব্যবসায়ী বলেন, এর আগে সেখানে এমন সমস্যা (বর্ণবাদ) ছিল না, অথবা চোখে পড়েনি। রোমারিও অর্ধেক কৃষ্ণাঙ্গ ছিল এবং তার সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। এটা মাদ্রিদে হয়েছে যেখানে এই ব্যক্তিটি (ভিনিসিউস) আছেন, যিনি... এই মাদ্রিদকে অভিবাসীদের রিয়াল মাদ্রিদ বলে ডাকি। এখানে আটজন কৃষ্ণাঙ্গ, দুজন সাদা বিদেশি এবং একজন মাত্র স্প্যানিয়ার্ড খেলেন।'
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘সে কি জানে এখানে কী করেছে সে? সে মেস্তায়ার (ভ্যালেন্সিয়ার ঘরের মাঠ) বেড়ায় উঠেছে এবং বলেছে, “আপনারা আমাকে কুকুরের ছানা বলেছেন।” আমি সেদিন আমার ছেলে এবং নাতির সঙ্গে মেস্তায়ায় ছিলাম, নাতিকে বললাম, “আলফনসিতো, তারা কী বলছে?” সে উত্তরে জানায়, "তারা বলছে তুমি (ভিনিসিউস) একটা গর্দভ।” ভেবেছি তারা তাকে বানর বলেছে। কিন্তু তা নয়। এবং আমার ছেলে আলফনসোকে বললাম, “তারা কী বলছে?” উত্তর একই ছিল, “গর্দভ”। এই বালক এলো, সেখানে দাঁড়াল এবং তার নিজেকে স্পর্শ করতে করতে বলল, “তোমরা সেগুন্দায় (দ্বিতীয় বিভাগ) নেমে যাবে” এবং তারা তার লাল কার্ড তুলে নিল, কিন্তু এটা কী!’
পাকো রোইগ ভিনিকে দারুণ খেলোয়াড় মানলেও ব্যক্তি হিসেবে খুব বেশি নম্বর দিচ্ছেন না, ‘আমাদের দিকে দুই থেকে তিনটি স্ট্যান্ড ছুড়ে মারা হয়, সমর্থকদের দুই থেকে তিনটি খেলায় মাঠে আসার অনুমতি দেয়া হয়নি, এবং এটাও মাফ করে দিতে হয়। সে হয়ত একজন দারুণ খেলোয়াড়, যেটা নিজেও বিশ্বাস করি, কিন্তু সে একজন.........ফালতু ব্যক্তি।’